শেল, বিপি, আরামকো ও গ্লেনকোরের মতো আন্তর্জাতিক জ্বালানি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহকারীর তালিকায় নাম লেখাতে যাচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সরকারের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
ঢাকায় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, এলএনজি সরবরাহে প্রতিযোগিতা বাড়ানো ও খরচ কমানোর লক্ষ্যে এসব বড় জ্বালানি কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এর আগে স্পট বাজার থেকে মূলত ভিটল, গুনভর ও এক্সিলারেটের মতো প্রতিষ্ঠান এলএনজি সরবরাহ করত।
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ‘জ্বালানি খাতের বড় বড় কোম্পানি যেমন আরামকো, শেল ও বিপি এলএনজি সরবরাহের জন্য আবেদন করেছে। খাতটি খুলে দেওয়ার এটাই হলো সুবিধা। আরও বেশি প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে ও খরচ বাঁচাতে আমরা খাতটি খুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
জ্বালানি খাতের বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশে এলএনজির চাহিদা বাড়তেই থাকবে, কারণ, দেশটিতে জনসংখ্যা বাড়ছে এবং নিজস্ব গ্যাসের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। ২০১৮ সালে দেশে প্রথম এলএনজি আমদানি করা হয়। ২০২৩ সালে এলএনজি আমদানি হয় ৫২ লাখ মেট্রিক টন, যা তার আগের বছরের চেয়ে ১৯ শতাংশ বেশি ছিল।
উল্লেখ থাকে যে, প্রতিবছর বাংলাদেশ ৫০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকার এলএনজি আমদানি করে। এই গ্যাস মূলত ব্যবহার করা হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে। তবে আমদানি করা এলএনজির অর্ধেকের বেশি আনা হয় কাতার ও ওমান থেকে দুই সরকারের সঙ্গে ঢাকার স্বাক্ষর করা চুক্তির আওতায়। বাকিটা স্পট বা খোলাবাজার থেকে কেনা হয়।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনসক্ষমতার অর্ধেকের বেশি গ্যাসনির্ভর। কিন্তু অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়মিতভাবে গ্যাস পায় না।
প্রতিবেদনে সব মিলিয়ে ৩৩টি কোম্পানির একটি তালিকা কথা রয়টার্স বলেছে, যারা বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহ করতে চায়। তাদের মধ্যে ২২টি নতুন সরবরাহকারী রয়েছে। সৌদি আরামকোর বাণিজ্যিক শাখা আরামকো ট্রেডিং কোম্পানি, বিপি সিঙ্গাপুর, শেল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং মিডল ইস্ট এবং গ্লেনকোর সিঙ্গাপুর নতুন সরবরাহকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে।
অনুমোদন করা তালিকায় ভিটল এশিয়া, গুনভর সিঙ্গাপুর ও এক্সিলারেট এনার্জির নাম রয়েছে। এসব কোম্পানি আগে থেকেই বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহ করে।
এর আগে গত নভেম্বরে আরপিজিসিএল স্পট বাজার থেকে এলএনজি কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল। নতুন তালিকা করার আগে বাংলাদেশের এলএনজি সরবরাহকারীর তালিকায় ২৩টি কোম্পানি ছিল।