আরিফুল ইসলামের (৩৮) কাছে জীবনের অর্থ এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যত আর মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা। লিভার সিরোসিস (গ্রেড-২) আক্রান্ত হয়ে হারিয়েছেন চলাফেরার শক্তি। গাজীপুরের শ্রীপুরে মাওনা সলিং মোড়ের চান মিয়ার বাড়িতে টিনশেড এক রুমে থাকেন স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে।
টাকার অভাবে দুই মাসের ঘর ভাড়া বাকি পড়েছে আরিফুলের। মুদি দোকানে বাকি ৩ হাজার টাকা। ওষুধও শেষ হয়ে গেছে। ওষুধ খেতে না পেরে এখন প্রায়ই রক্তবমির হচ্ছে তার।
মরণব্যাধি লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় মাসে ৫ হাজার টাকার ওষুধ লাগছে তার। কিন্তু হাতে ওষুধ কেনার টাকা নেই। সুস্থ হতে পারবে কি না জানা নেই, তবুও ছোট্ট মেয়ের জন্য বেঁচে থাকার ব্যাকুলতা তার।
শরীরের শক্তি ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে যেন। স্থির হয়ে দুই মিনিটের বেশি দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না আরিফুল। লিভারে পানি জমেছে, ফুলে গেছে শরীর।
আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘জীবন বিষন্ন হয়ে উঠেছে। বাচ্চা মেয়েটির জন্য খারাপ লাগে। আমি বাঁচতে চাই, সুস্থ হতে চাই। মেয়েটির জন্য আরও কিছুদিন বেঁচে থাকতে চাই।‘
খুলনার দৌলতপুর উপজেলার আড়ংঘটার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম। রাজধানী ঢাকাতে বছর পাঁচেক আগেও ভালোই ছিলেন তিনি। খিলক্ষেতে লোটাস কামাল টাওয়ারের লিফটম্যান ছিলেন। ভালোই চলছিল সংসার, জীবন। কিন্তু থমকে যেতে হয় আরিফুলকে! পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায় হেপাটাইসিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত তিনি। লিভার বিশেষজ্ঞ মাহতাব স্বপ্নীলের অধীনে চিকিৎসাও নেন। কিন্তু কপাল খারাপ আরিফুলের। বছর খানেক আগে খবর আসে লিভারের অবস্থা ভালো না। লিভার সিরোসিস অবনতির দিকে যাচ্ছে। ওষুধ চালিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
শরীর ক্রমশ খারাপ হওয়ায় লিফটম্যানের চাকরি ছাড়তে হয়। রাজধানী ঢাকায় ঘরভাড়া বেশি হওয়ায় ঢাকা শহর ছেড়ে চলে যান শ্রীপুরের মাওনায় বোনের কাছে। সেখানে এক রুম ভাড়া নেন।
উপার্জন না থাকায় সংসারের খরচ চালানোও আরিফুলের পক্ষে এখন দুঃসাধ্য। গ্রামে এক কাঠা জমিও ছিল তার। চিকিৎসার জন্য শেষ সম্বল জমিটুকু বিক্রি করে দিয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায়। এখন আর কিছুই নেই বিক্রির মতো।
আরিফুলের আকুতি- ‘আমাকে কিছু বাজার করে দিন। বউ-বাচ্চা নিয়ে ক্ষুধার কষ্টে আছি। অমানবিক জীবন কাটাচ্ছি। আপনাদের কাছে মিনতি, আমার সামনে আর কোনো রাস্তা খোলা নেই।’
আরিফুল ইসলাম এখনও স্বপ্ন দেখেন, যদি সহযোগিতার হাত মেলে তাহলে হয়ত ফের জীবন-জীবিকার হাল ধরতে পারবেন। তখন মানুষের কাছে হাত পাততে হবে না আর। অর্ধাহার-অনাহারে থাকা স্ত্রীর মুখে হাসি ফুটবে, হাসি ফুটবে ছোট্ট মেয়ের মুখে। তাই হৃদয়বান মানুষের কাছে সহায়তা চান আরিফুল ইসলাম।
কেউ চাইলে খাদ্য কিনে দিয়ে, ওষুধ কিংবা নগদ টাকা দিয়ে আরিফুলের পাশে দাঁড়াতে পারেন। সহায়তা পাঠাতে পারেন ০১৬৭৪-২৮২২৫৭ এই বিকাশ নম্বরে।