
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তি ও দেশটির সরকারের পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল পাকিস্তানের ইসলামাবাদ। ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের ডাকা ইসলামাবাদমুখী জনস্রোত দমাতে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন। বিক্ষোভ–মিছিলে কার্যত অবরুদ্ধ রাজধানী। সংঘর্ষ আর ব্যাপক ধরপাকড়ের মধ্যে মঙ্গলবার পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত চার হাজার মানুষ আটক হয়েছে। মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী।
নিরাপত্তা–সংশ্লিষ্ট জানিয়েছেন, পিটিআইয়ের বিক্ষোভ চলাকালে শ্রীনগর মহাসড়কে কিছু দুষ্কৃতকারী রেঞ্জার্স কর্মীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় চারজন প্যারাট্রুপার ও একজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও পাঁচ প্যারাট্রুপার ও দুই পুলিশ সদস্য। আহতদের বেশিরভাগের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিরাপত্তাঝুঁকি বিবেচনায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা ও জঙ্গি তৎপরতা দমনে কঠোর হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইসলামাবাদের ডি চকে জমায়েত করার ঘোষণা দিয়েছেন পিটিআই নেতা-কর্মীরা। তাদের ঠেকাতে রাজধানীর সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের সভা-সমাবেশ। তবে বাধা উপেক্ষা করে সোমবার রাজধানী ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে পৌঁছে গেছে পিটিআই নেতা-কর্মীদের গাড়িবহর। জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, খাইবার-পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুরের নেতৃত্বে গাড়িবহর ব্রাহমা মোড়ে পৌঁছালে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে পিটিআইয়ের পাঁচ সাংসদসহ প্রায় চার হাজার মানুষকে।
এদিকে, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকবি বলেছেন, ইসলামাবাদের ‘রেড জোনে’ প্রবেশ করলে ইমরান খানের সমর্থকদের গ্রেপ্তার করা হবে। সরকারি ভবনের সুরক্ষায় ওই এলাকায় চলাচল নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনা চলছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পিটিআই চেয়ারম্যান গহর আলী খান বলেছেন, আলোচনা চলমান, এ নিয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি শিগগিরই জানানো হবে। এর আগে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন গহর খান। তিনি জানান, পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা এই বিক্ষোভকে ‘চূড়ান্ত ডাক’ বলে অভিহিত করেছেন। একই সঙ্গে বিক্ষোভ স্থগিত করার গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বানও জানান পিটিআই চেয়ারম্যান।