
মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান, বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের প্রধান নির্বাহী, ওয়ারেন বাফেট, ১৫ হাজার কোটি ডলারের বেশি মূল্যের সম্পদের মালিক। ফোর্বসের হিসেবে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকায় তিনি ছয় নম্বরে। সোমবার কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন বাফেট। এতে মৃত্যু নিয়ে তাঁর ভাবনা, বেঁচে থাকার প্রত্যাশা আর কীভাবে তাঁর বিপুল সম্পদের ভাগ–বাটোয়ারা হবে।
সিএনএন জানিয়েছে, ৯৪ বয়সী বাফেট লিখেছেন, ‘দিন শেষ সময় জয়ী হয়। কিন্তু সময় চঞ্চলও হতে পারে। কখনো কখনো তা অন্যায্য ও নিষ্ঠুর। জীবনকে কখনো কখনো জন্মেই শেষ করে দেয় কিংবা কিছুদিন পরই। আবার কখনো কখনো শত বছর বা তার চেয়েও বেশি দিন অপেক্ষা করে। আজ পর্যন্ত তিনি ভাগ্যবান। কিন্তু বেশি দিন নেই, সে চলে আসবে।’
প্রায় ১৩শ’ শব্দের চিঠিতে বাফেট লিখেছেন, তিনি আশা করছেন, তাঁর তিন সন্তান লম্বা সময় ধরে বেঁচে থাকবেন এবং সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁদের পিতার সম্পদ আর কোন কোন মানবহিতৈষী কাজে ব্যবহার করা যায়। তাঁর তিন সন্তান হলেন সুজি, হাওয়ার্ড ও পিটার। তারাও ষাটের কোটা ছাড়িয়েছেন।
তাঁর সন্তানেরা সম্পদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারলে কী হবে, সে নির্দেশনাও দিয়েছেন বাফেট। সেক্ষেত্রে তিনটি ট্রাস্টি তাঁর সম্পদের সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী হবে। তবে এগুলোর নাম তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেননি।
বাফেট কোম্পানির ১ হাজার ৬০০ ‘ক্লাস এ’ শেয়ার ২৪ লাখ ‘ক্লাস বি’ শেয়ারে রূপান্তরিত করছেন। রূপান্তরিত এসব শেয়ারের মধ্যে ১৫ লাখ শেয়ার সুজান টমসন বাফেট ফাউন্ডেশনে যাবে। এছাড়া তিন লাখ শেয়ার দেওয়া হবে অন্য তিনটি ফাউন্ডেশনে। এগুলোর নেতৃত্বে আছেন তাঁর সন্তানেরা। এসব শেয়ারের মোট মূল্য ১২০ কোটি ডলার।
ওয়ারেন বাফেট প্রতিবছর তাঁর চারটি পারিবারিক ফাউন্ডেশনে দান করে থাকেন। এর পাশাপাশি তাঁর অর্থ যায় বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে। ২০০৬ সালে তিনি অঙ্গীকার করেন যে ধীরে ধীরে তিনি তাঁর সম্পদ দান করে দেবেন।
যাদের বিপুল সম্পদ রয়েছে তাঁদের জন্যও কিছু উপদেশ দিয়েছেন ওয়ারেন বাফেট। লিখেছেন, ‘আপনার সন্তানেরা যখন বড় হবেন, তাঁদেরকে আপনার উইল পড়তে দিন এবং তারপর তাতে সই করুন। নিশ্চিত হন যে তাঁরা যেন আপনার যুক্তি এবং আপনার মৃত্যুর পর তাঁদের ঘাড়ে যে দায়িত্ব পড়বে, এই দুটি বিষয়ই বুঝতে পারেন।’