সোমবার, ১৩ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৮শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, শরৎকাল

ট্রেন্ডিং টপিক

ইসরায়েলে পৌঁছুলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ ইসরায়েলে পৌঁছেছেন। এয়ার ফোর্স...

পিআর পদ্ধতি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের ইস্যুটি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে...

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি, শহীদ মিনারে অবস্থান

২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাতা বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে...

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের অবস্থান

‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন-২০২৫’ দ্রুত চূড়ান্ত করে অধ্যাদেশ জারির...

দোতারার তারে বাঁধা ৩০০ গান — বাউল আরেজ আলীর জীবনকথা

ছবি : সংগৃহিত

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার সেনপাড়া গ্রামে এক সাধারণ ঘরের সন্তান আরেজ আলী। কিন্তু গানের জগতে তার বিচরণ ‘সাধারণ’ নয়। নিভৃতচারী হলেও প্রায় পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে বাউল সঙ্গীতের ধারায় নিজেকে মেলে ধরেছেন বাউল আরেজ আলী। দোতারার তারে বাঁধা তার শত-শত গান এখনো মানুষের হৃদয়ে বাজে।

তবে তার এই গানের সাধনায় এক গভীর নিঃসঙ্গতার ছাপ পাওয়া যায়। ১৯৬৬ সালে জন্ম নেওয়া আরেজ আলীর শৈশব থেকেই গানের প্রতি ছিল অবিচ্ছেদ্য ভালোবাসা। বাবা আর বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় গানের প্রথম তাল শিখেছিলেন বাড়িরই আঙিনায়।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি তার চোখে আজও জ্বলজ্বলে। এরপর জীবনের অজস্র দিন পেরিয়ে গানের মধ্যেই নিজের শান্তি খুঁজে পেয়েছেন তিনি। ১৯৮২ সালে লেখা প্রথম দেশাত্মবোধক গান “মা গো ভাই কোথায় গেলো…” দিয়ে শুরু করেন এক অনন্য যাত্রা। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০ গানের স্রষ্টা, ও গানের সুর করেছেন তিনি। নিজ হাতে বানিয়েছেন ৩০০০ দোতারা। বাজিয়েছেন হারমোনিয়াম, সারিন্দা, বেহালা। তবু তিনি বলেন, “মানুষ বলবে আমি শিল্পী কি’না, আমি তো নিজেকে নিজেই শিল্পী বলতে পারি না।”

বর্তমানে আরেজ আলী বদলগাছী মহিলা কলেজের নৈশ প্রহরী। যা বেতন পান তাতেই সংসার চালাতে হয়। ভাবনায় তার অবসর! অবসর আসছে কিছু মাস পরেই, আর তার পরের দিনগুলো নিয়েই দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটে তার।

আরেজ আলীর সংগীত সাধনায় আরও একজন অনুপ্রেরণা ছিলেন তার সহধর্মিনী জাহানারা। যার মৃত্যু আরেজ আলীকে একা করে দেয়। যিনি গান শুনতেন, গানের উৎসাহ দিতেন। সহধর্মিনীর শূন্যতায় আজও আরেজ আলীর হৃদয়ে গভীর ব্যথার ছাপ দেখা যায়। যা তার গানের স্বরলিপিতে স্পষ্ট।

গানের মাধ্যমে তিনি তুলে ধরেছেন আত্মতত্ত্ব, দেশাত্ববোধ, ভালবাসা ও আধ্যাত্মিকতার সন্ধান। তার গানের লাইনগুলো একইভাবে বেদনারও প্রকাশ করে —

“কার কাছে কই, আমার প্রাণের মুর্শিদ বিনে, বন্ধূ কেহ নাই…” আবার লিখেছেন,
“ওরে শ্মশান ঘাটে মাটির উপর কাষ্ঠের বিছানায়, চিতায় পুড়ে সাধের দেহ জলে ভেসে যায়…”

যদিও তিনি কখনো নিজেকে বড় শিল্পী মনে করেননি, কিন্তু তার গানের মাধুর্য্য ও জীবনযাত্রার সংগ্রাম সবাইকে অনুপ্রেরণা দিয়ে চলেছে। বাউল সঙ্গীতের জগতে তার দোতারার তারে বাঁধা গানগুলো এক অনন্য উদাহরণ।

জীবনের অন্তিম অধ্যায়ের অন্ধকারের জন্য তিনি সৃষ্টিকর্তার করুণা প্রত্যাশা করেন। যার প্রকাশ এবং প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে তার রচিত সব লেখাতে। এ এক শিল্পীর জীবন, যা গানের সুরে আঁকা, দোতারার তারে বাঁধা। যা তার নিঃসঙ্গ প্রয়ানেও থামবে না, কখনো হারিয়ে যাবে না।

সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছে কন্ঠশিল্পী পায়েল এর সামাজিক প্রতিষ্ঠান শেকড়। সেই সাথে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরেজ আলীর এই গানগুলিকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাঁচিয়ে রাখা আরও সহজ হতো বলে মনে করেন সংগঠক পায়েল। গানগুলিকে সংরক্ষণ করা সম্ভব হলে তা আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলে বোদ্ধাদের বিশ্বাস।

সর্বশেষ সংবাদ

এমন আরো সংবাদ
এশিয়ান পোস্ট বিডি ডট কম

মঙ্গলবার নতুন কুঁড়ির চূড়ান্ত পর্বের বাছাই শুরু

বিটিভিতে শিশু কিশোরদের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান ‘নতুন কুঁড়ি’র চূড়ান্ত পর্যায়ের...

ইসরায়েলে পৌঁছুলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ ইসরায়েলে পৌঁছেছেন। এয়ার ফোর্স...

১৬ অক্টোবর এইচএসসি’র ফল প্রকাশ

আগামী ১৬ অক্টোবর প্রকাশিত হবে চলতি বছরের এইচএসসি ও...

পিআর পদ্ধতি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের ইস্যুটি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে...