
তিস্তার পানি বণ্টন এবং তিস্তা নদীর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে পূর্বঘোষিত ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি আজ শুরু হচ্ছে। সরাসরি বিএনপির দলীয় কর্মসূচি না হলেও বিএনপি দলীয়ভাবে সমর্থন দিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
মূলত ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ কমিটির ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আর এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লালমনিরহাট তিস্তা রেল সেতুসংলগ্ন এলাকায় এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারীর ১১ স্থানে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের উপস্থিতিতে এই সমাবেশ হবে। পাশাপাশি মিত্র রাজনৈতিক দলের নেতারাকর্মীরাও অংশ নেবেন। ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির সমাপনী দিনে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাও’ এই স্লোগান নিয়ে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এই ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচিতে অংশ নিবে বিএনপিসহ তিস্তা তীরবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ।
আয়োজক সূত্রে জানা যায়, তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি তিস্তা নদীর কাউনিয়া সেতু, মহিপুর সেতু এবং তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টসহ লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও নীলফামারীর ১১ পয়েন্টে তাঁবু খাঁটিয়ে একই সময়ে কর্মসূচি পালন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তিস্তা অভিমুখে পদযাত্রা এবং নদীর দুই তীরে ২৩০ কিলোমিটারজুড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ কমিটি। তিস্তা চুক্তিসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমস্যার সমাধান ও দেশের স্বার্থ রক্ষায় ভারতের ওপর চাপ বাড়াতে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়োজকগণ।
‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ কমিটির পদযাত্রা কর্মসূচির বিভিন্ন স্থানে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে চলছে কর্মসূচির শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির জন্য ১১ পয়েন্টের নদীর দুই পারে বাঁশের খুঁটিতে সামিয়ানা টানিয়ে বানানো হয়েছে তাঁবু। যেখানে রাত যাপন করবে আন্দোলনে যোগ দেওয়া মানুষরা। তার পাশেই তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য দলে দলে আসছে মানুষজন। ইতোমধ্যে প্রতিটি পয়েন্টে পৌঁছে গেছে সাংস্কৃতিক কর্মীরা। তারা প্রস্তুত এই দুইদিনের আয়োজনকে নাচ গান আর নাটিকার মাধ্যমে জমিয়ে তুলতে।
‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ কমিটির সমন্বয়কারী ও মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু জানান, তিস্তা পাড়ের মানুষজন এবার নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন। তাদের স্বপ্ন পূরণে যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, সেটি সফলভাবে বাস্তবায়নে কর্মসূচিস্থলে তারা সকাল থেকেই হাজির হচ্ছে দলে দলে। সবার স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে কর্মসূচি সফল হবে ইনশাআল্লাহ। এসময় তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।