
আজ সোমবার চীন সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওয়াং ই’র আমন্ত্রণে বেইজিং যাচ্ছেন তিনি। এর আগে গত ১৫ জানুয়ারী বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছিলেন তিনি।
সফরসূচি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “২১ জানুয়ারি রাজধানী বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। তারপর সাংহাইয়ে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে হবে। এর বাইরে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির (ইভি) কারখানা এবং ফ্রুটস প্রিজারভেশন-সংক্রান্ত দুটি শিল্পকারখানা আমাদের দেখানো হবে। তাদের নতুন এসব টেকনোলজি আমাদের দেশে কাজে আসতে পারে।”
এর আগে রোববার (১৯ জানুয়ারী) উপদেষ্টা চীন, রাশিয়া ও মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন। পৃথক বৈঠকে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর আশ্বাস দেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা অর্থনীতি, বাণিজ্যসহ নানা ইস্যুতে নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেন।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। এর মধ্যে দিয়ে ঢাকা-বেইজিং বোঝাপড়া আরও বাড়বে। আমরা খোলা মন নিয়ে বাংলাদেশের সব প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করতে প্রস্তুত।’
এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রাশিয়ার নতুন রাষ্ট্রদূত। পরে তিনি বলেন, অতীতেও রাশিয়া বাংলাদেশের পাশে ছিল, সেই ধারা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশের উন্নয়নে রাশিয়ার অব্যাহত সহায়তার কথা উল্লেখ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের কাজ সময়মতো সমাপ্তির বিষয়টিও ওই দিন উঠে আসে আলোচনায়।
ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জি খোজিন বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টাকা পরিশোধের জটিলতা দ্রুতই কেটে যাবে বলে আশা করছি। এ নিয়ে কারিগরি দল কাজ করছে। স্থানীয় মুদ্রাসহ সার্বিক সম্পর্কের বিষয়ে ইতিবাচক দুই দেশ। বাংলাদেশ থেকে কৃষি ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য কর্মী নেবে রাশিয়া। তবে এ নিয়ে আরও আলোচনা হবে। পরে চুক্তি করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
চীনা বাজারে বাংলাদেশ ৯৮ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে। এরপরও চীনে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি বাড়ছে না। সে কারণে বাণিজ্য ভারসাম্যও রক্ষা করা যাচ্ছে না। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ভারসাম্য বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা উঠবে।
এদিকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু প্রাধান্য পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা সমঝোতা স্মারক রয়েছে। সেই সমঝোতা স্মারকের মেয়াদ এরইমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সফরে এই সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হবে। এছাড়া, বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে সহায়তা দিতে আগ্রহী চীন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সফরে বিষয়টি আলোচনায় উঠতে পারে।