
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে বিএনপির যোগ দেয়া না দেয়া নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। সে বিষয়ে এখনো আলোচনা করছেন দলটির নেতারা।
আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সর্বদলীয় এ বৈঠক শুরু হওয়া কথা। তার আগে সকালে বৈঠকে বিএনপির যোগদান নিয়ে অনিশ্চয়তার খবর আসে সংবাদমাধ্যমে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্যের বরাতে যমুনা টিভির খবরে বলা হয়, “এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত তারা বৈঠকে যাচ্ছেন না। তবে দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।”
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার ডাকা সর্বদলীয় সভায় বিএনপি যাবে না এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কীভাবে অংশগ্রহণ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। অপেক্ষা করুন।”
ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থান নিয়ে ঘোষণাপত্র তৈরির অংশ হিসেবে সর্বদলীয় এ বৈঠক আয়োজনের কথা মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
তিনি বলেছিলেন, “গত ১২/১৩ দিন ছাত্রদের ঘোষণাপত্র অনুকরণে একটা ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্টেকহোল্ডারদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি। সবার সাথে আমাদের কথা বলা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াত, নারী সংগঠন, শিক্ষক সংগঠন বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সাথে, ছাত্রদের সাথে আমরা কথা বলেছি।
মাহফুজ বলেন, “সরকার কীভাবে ঘোষণাপত্রটি জারি করবে সেটা বৈঠকের মাধ্যমে স্পষ্ট হবে। আশা করি বাংলাদেশের জনগণের ঘোষণাপত্রের মধ্য দিয়ে তাদের প্রত্যাশা প্রতিফলিত হবে।”
এ বিষয়ে ২৯ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নাৎসি বাহিনীর মত অপ্রাসঙ্গিক এবং ১৯৭২ সালের সংবিধানের ‘কবর’ রচনা করা হবে।”
এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ১৪ জানুয়ারি বলেন, “বিষয়টা এত বেশি সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ যে এটা একদিনের নোটিসে করা সম্ভব না।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করেছি, আমরা আরও আলোচনা করছি। আমাদের অন্যান্য দলগুলো আছে, তাদের সাথে আলোচনা করতে হবে। শুধু তাই নয়, সংবিধান বিশেষজ্ঞ যারা আছেন তাদের সঙ্গেও কথা বলতে হবে কারণ এই ঘোষণাপত্রের মধ্যে সংবিধানের ব্যাপারেও বহু কথা আছে, যেটি আমাদের দেখতে হয়।”
বিএনপি নেতাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, দলটি নির্বাচনকে প্রাধান্য দিচ্ছে; জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আগে তাদের যে অবস্থানে ছিল, এখনও তাই আছে। বিএনপির পক্ষ থেকে আলাদা ঘোষণাপত্র দেওয়া হতে পারে– এমন আলোচনাও আছে।