নাশকতার একটি মামলায় নেত্রকোনা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন কয়েকজন আসামি। কিন্তু জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় ‘জয় বাংলা` স্লোগান দেন তারা। আদালত প্রাঙ্গনে এ সময় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, খালিয়াজুরি উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গত ২০ সেপ্টেম্বর নাশকতা আইনে একটি মামলা করেন একই উপজেলার মাইনুল ইসলাম তালুকদার। মামলায় ৪৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৩০ জনকে আসামি করা হয়।
জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর আসামিরা দোতলায় এজলাস কক্ষ থেকে বের হয়ে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় কয়েকজন মুঠোফোনে তাঁদের স্লোগানের ভিডিও ধারণ করেন। পরে এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর সংঘবদ্ধ আসামিরা উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর করেন। মামলায় আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে ২৮ দিনের জামিন নিয়েছিলেন।জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আজ দুপুরে নাম উল্লেখ করা ৪৩ জন আসামি জেলা জজ আদালতে হাজির হয়ে আবার জামিন প্রার্থনা করেন। এ সময় বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান শুধু অসুস্থ একজনের জামিন মঞ্জুর করেন। বাকিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এদিন জামিন নামঞ্জুর হওয়া অন্য আসামিরা হলেন, খালিয়াজুরি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামসুজ্জামান তালুকদার, খালিয়াজুরি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম আবু ইসহাক, তাঁর ছোট ভাই উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, চাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, মেন্দিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান হেকিম, ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক স্বাগত সরকারসহ অন্তত ৪২ জন।
প্রত্যক্ষদর্শী এক আইনজীবী গণমাধ্যমকে বলেন, স্লোগান দেওয়ার সময় আসামিদের পাশে থাকা আকাশ মিয়া নামের একজনকে বেশ কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল যুবক মারধর করে তাঁর জামা ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন। পরে অবশ্য বিএনপি–সমর্থিত বেশ কয়েকজন আইনজীবী এসে ওই তরুণকে উদ্ধার করে একটি কক্ষে নিয়ে যান।
এ প্রসঙ্গে জানতে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মফিজ উদ্দিন শেখের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।