
গত মাসে ত্রাণের আটা নিয়ে ফিলিস্তিনি ট্রাকচালক হাজেম যাচ্ছিলেন দক্ষিণ গাজার ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে। সে সময় সংঘবদ্ধ লুটপাটকারীরা তার ট্রাকসহ শতাধিক ট্রাক আটকে আটাসহ সব ধরনের ত্রাণ লুট করে। এসব ত্রাণ গাজায় পাঠিয়েছিল জাতিসংঘ। চালক হাজেম জানিয়েছেন, ত্রাণগুলো ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে পৌঁছাতে না পেরে অনেক কষ্ট পেয়েছেন তিনি।
ইসরায়েললি আগ্রাসনে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনী পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার পর এই সুযোগে লুটপাট শুরু করেছে একটি গোষ্ঠী। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা একদমই নেই। লুটপাটকারীরা ত্রাণ লুট করে সেগুলো সাধারণ মানুষের কাছে অতি চড়া দামে বিক্রি করছে। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে একেকটি আটার বস্তা ২২০ ডলার সমমূল্যে বিক্রি করছে ওই চক্রটি।
এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েল থেকে গাজায় প্রবেশের করিম আবু সালেম ক্রসিং দিয়ে আর কোনো ত্রাণ না পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ। তাদের শঙ্কা, ত্রাণের ট্রাক গেলেই সেগুলো লুটপাটের হবে। গত মে মাসে হামাসের সর্বশেষ শক্ত অবস্থান রাফায় হামলা চালায় ইসরায়েল। এর পরই গাজার সার্বিক অবস্থার অবনতি হয়। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থার কর্মীদের অভিযোগ, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে এসব লুটপাট হতে দিচ্ছে।
এদিকে ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার বাহিনী। সোমবার রাতে বাস্তুচ্যুত মানুষের ক্যাম্প ও স্কুলে ড্রোন দিয়ে বোমা ফেলে তারা। উত্তরাঞ্চলের একমাত্র চালু থাকা কামাল আদওয়ান হাসপাতাল খালি করে সেটি বন্ধ করতে বলেছে ইসরায়েল। ড্রোন হামলায় আল-মাওয়াসিরতে সাতজন এবং নিরাপত্তারক্ষী ও বেসামরিকদের বহনকারী গাড়িতে হামলায় আরও চারজন নিহত হন। অপরদিকে নুসেইরাত শরণার্থী ক্যাম্পের স্কুলে হামলা চালিয়ে আরও একজনকে হত্যা করে তারা। এতে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতার নির্মম চিত্র তুলে এনেছে আলজাজিরা। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, চার মাস আগে সাইমা আল-দাক্কি নামের এক নারী তার দুই সন্তানকে পোলিও টিকা খাইয়ে আনেন। টিকা খাওয়ানোর পরের দিনই তার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে সাইমা আল-দাক্কি প্রাণ হারান, দুই সন্তানই তাদের পা হারিয়েছে। পোলিও থেকে রক্ষার ব্যবস্থা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু বোমার আঘাতে হারানো পা গুলো কোথায় পাবে তারা?