
সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর দেশ গঠনের কাজ করছে বিদ্রোহীরা। আর দেশটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে অতি উৎসাহী হয়ে উঠেছে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো। সিরিয়ায় নিজেদের দূত পাঠাচ্ছে তারা। তাদের বড় লক্ষ্য বাশারের পতনে ভূমিকা রাখা বিদ্রোহীদের সাথে খাতির জমানো।
এরইমধ্যে মধ্যপ্রাচ্য সফরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করে সিরিয়া ইস্যুতে কথা বলেছেন তিনি। শুক্রবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গেও তার কথা হয়েছে। ব্লিঙ্কেন বলেছেন, সিরিয়ার নতুন সরকারকে মানবাধিকারের মূল নীতিগুলোর প্রতি সম্মান জানাতে হবে, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে হবে এবং দেশটি যাতে সন্ত্রাসবাদের ঘাঁটিতে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সিরিয়ায় উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা পাঠিয়েছে তুরস্ক। বৃহস্পতিবার রাজধানী দামেস্কের উমাইয়া মসজিদে তুরস্কের জাতীয় গো য়েন্দা সংস্থার প্রধান ইব্রাহিম কালিনকে দেখা গেছে। এই মসজিদেই বাশারের পতনের দিন ভাষণ দিয়েছিলেন এইচটিএস নেতা আবু মোহাম্মদ আল–জুলানি। সিরিয়ায় কুর্দি নিয়ন্ত্রিত কিছু অঞ্চল রয়েছে। কুর্দিদের সন্ত্রাসী তালিকায় রেখেছে তুরস্ক। বাশারের পতনের পর গোষ্ঠীটি নতুন সরকারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের ইঙ্গিত দিয়েছে। সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গেও আঙ্কারার সম্পর্ক রয়েছে।
এদিকে, সিরিয়ায় চলমান বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়েছে ইসরায়েল। বাশারের পতনের দিন থেকেই দামেস্কসহ দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে পাঁচ শতাধিক হামলা চালিয়েছে তারা। হামলায় ধ্বংস হয়েছে সিরিয়ার বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, অস্ত্র কারখানা, অস্ত্রাগার, যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ ও ক্ষেপণাস্ত্র। দুই দেশের সীমান্তে গোলান মালভূমির বাফার জোন দখল নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৯৭৩ সালে আরব–ইসরায়েল যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো এই বাফার জোন অতিক্রম করে সিরিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে ইসরায়েলের সেনারা।
এ নিয়ে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বৃহস্পতিবার বলেছেন, নিজেদের সুরক্ষার জন্য গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলি সেনাদের অবস্থানের বিষয়টি যৌক্তিক। সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। হামলা চালানো বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
রাশিয়া প্রায় এক দশক ধরে বাশারকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সহায়তা করেছে। এ জন্য সিরিয়ায় দুটি সামরিক ঘাঁটিও গড়ে তুলেছিল মস্কো। ঘাঁটিগুলোর সুরক্ষার জন্য সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু করেছে তারা। রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাাইল বোদানভ এইচটিএস নেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, আইএস এর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়তে সিরিয়ার অনুরোধেই ঘাঁটিগুলো স্থাপন করা হয়েছিল।