
স্বাধীনতার পর থেকে হিন্দুরা মায়ের কোলের মতো আছে- বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। বরিশাল সদর উপজেলায় তিন দিনব্যাপী চরমোনাই মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘বর্তমানে একটি কঠিন অবস্থা চলছে। দেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র বন্ধে জাতীয় ঐক্য করতে হবে। ক্ষমতা ও স্বার্থের নেশায় থাকলে চলবে না।’
বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে আপনারা মায়ের কোলের মতো আছেন। কিন্তু কেউ কেউ দেশে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য আপনাদের ব্যবহার করছে, আপনারা সতর্ক থাকুন।’
বাংলাদেশ ফরায়েজী জামায়াতের আমির হাজী শরীয়তুল্লাহর উত্তরসূরি বাহাদুরপুরের পীর হাফেজ মাওলানা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘চরমোনাই পীরের ইমামতিতে কাজ করতে আমরা একমত আছি। এ জন্য যা যা করার তা করতে রাজি আছি। এ দেশের আলেম ওলামা ৮৮ বা ৯৮ এর বন্যার পানিতে ভেসে আসেনি। সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি করছি।’
সেখানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, ‘ঐক্যের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবো- ইনশাআল্লাহ। আমরা কোরআনি শাসন চাই। এ জন্য সবাই মিলে এক হয়ে কাজ করবো।’
ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘৫ আগস্ট পরিবর্তন হলেও পরাজিতরা ষড়যন্ত্র করছে। তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে উঠেপড়ে লেগেছে। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত চিন্ময় কৃষ্ণ দাস দেশকে অস্থিতিশীল করতে অপচেষ্টা করছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কেন বিবৃতি দেবে? ভারতীয় মিডিয়াগুলো অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা ইসলামি রাজনৈতিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।’
খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ বলেন, ‘ঐক্যের কোনও বিকল্প নেই, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হবো।’
সম্মেলনে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, ‘কোন রাজনৈতিক দলকে প্রাধান্য দিয়ে অন্যদের অবজ্ঞা করা যাবে না। সকল দলের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে কাজ করতে হবে। ছোটখাটো বিরোধের কারণে যাতে আমরা নতুন করে দেশ গড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হই, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের শ্লোগান ‘নেতা নয়, নীতির পরিবর্তন চাই’ বাস্তবায়ন করে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন কিছু করতে হবে।’
এসময় আরও বক্তৃতা দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, বাংলাদেশ ফরায়েজী জামায়াতের আমীর হাজী শরীয়তুল্লাহর উত্তরসূরি বাহাদূরপুরের পীর হাফেজ মাওলানা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান, খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ, হাফেজ মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আল ফরিদী, কমলনগর পীর সাহেব আল্লামা খালিদ সাইফুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী।