
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত কয়েকদিনের ঘটনায় আমরা অত্যন্ত চিন্তিত উদ্বিগ্ন এবং আতঙ্কিত। ৫ আগস্টের বিজয় অনেক প্রাণ ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। রক্তে ভেসে গেছে বাংলাদেশের রাজপথ। দেশের মানুষ বারবার দেশমাতৃকার জন্য প্রাণ দিয়েছে। আজ প্রশ্ন উঠেছে- যার জন্য এতো প্রাণ দিলাম তার ফলশ্রুতি এই বাংলাদেশ!’
বুধবার(২৭ নভেম্বর) প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ‘শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন’ দিবস উপলক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নিজের ঘরেই যদি বিভাজন থেকে যায় তাহলে কোনো কিছুই সম্ভব নয়। আমি উদ্বিগ্ন। ধর্মকে কেন্দ্র করে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় উন্মাদনা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি।’
কেন এত ভয়াবহ অস্থিরতা— এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘তিন মাসও যায়নি, রাস্তায় রাস্তায় দাবি তুলছে, হত্যা, রক্তপাত হচ্ছে, জ্বালাও পোড়াও চলছে। কেন এত ভয়াবহ অস্থিরতা? সমস্যাটা কোথায়? আর কত বিভাজন থেকে বাংলাদেশকে টেনে তুলতে হবে। বারবার টেনে তোলা হবে, আবার পড়ে যাবে হিংসার কারণে।’
তিন মাসেই আমাদের আসল চেহারা বেরিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এমন চেহারা নিয়ে সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। গত কয়েকদিনের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যারা দায়িত্বে রয়েছেন, তারা যেন এমন কথা বলবেন না যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে৷ এ সরকার কারও দয়াতে হয়নি, রক্তের ওপর এ সরকার হয়েছে, তাই সরকারের দায়িত্ব জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটানো।’
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সামনে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘প্রথম আলো, ডেইলি স্টারের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা হলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, ‘জেলে গেছি, আবার জেলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি, কিন্তু এ দেশ আমরা দেখতে চাই না। যা অন্যায় তার বিরোধিতা করব। যারা সামনে থেকে লড়াই করি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে পিছপা হব না।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমানসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ড্যাবের সভাপতি হারুন আল রশিদ। সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালামের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মেহেদী হাসান।