
বাংলাদেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্র এবং শ্রমিকদের সমর্থনে আসা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল আজ মঙ্গলবার তাদের সফর শেষ করেছে। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস এক প্রেস নোটের মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছে।
মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিশেষ প্রতিনিধি কেলি এম. ফে রদ্রিগেজ এবং লেবার ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি আন্ডারসেক্রেটারি থিয়া লি। সফরে তাদের সঙ্গে ছিলেন ইউএসএআইডি-এর প্রতিনিধি, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সাথে সংশ্লিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ব্র্যান্ডগুলোর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব, এবং ওয়ার্কার রাইটস কনসোর্টিয়ামের নির্বাহী পরিচালক স্কট নোভা এবং আন্তর্জাতিক শ্রম বিশেষজ্ঞ ইউএনআই গ্লোবাল ইউনিয়নের মহাসচিব ক্রিস্টি হফম্যান।
এই সফরে অংশগ্রহণকারী যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ছিল পিভিএইচ কর্পোরেশন, গ্যাপ ইনকর্পোরেটেড এবং ভিএফ করপোরেশন, যারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত (আরএমজি) থেকে প্রতি বছর আনুমানিক ১.৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য কিনে থাকে।
মার্কিন দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও শাসন ব্যবস্থার জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, শ্রম অধিকার চর্চার দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করা। জাতীয় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা এবং জেন্ডার সমতা ও অন্তর্ভুক্তির জন্য অপরিহার্য।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতে, শ্রমিকদের মঙ্গল নিশ্চিত করার জন্য সরকারের, নিয়োগদাতাদের, ক্রেতাদের, নিয়ন্ত্রকদের এবং শ্রম ইউনিয়নগুলোর যৌথ দায়িত্ব রয়েছে। এতে সুরক্ষিত ও সম্মানজনক কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা এবং বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের সংগঠন গঠন এবং যৌথ দরকষাকষির অধিকার শক্তিশালী করা অন্তর্ভুক্ত।

প্রেস নোটে বলা হয়, শ্রম সংস্কার করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের শীর্ষ অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে। এই প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানায় যুক্তরাষ্ট্র। আমরা শ্রমিকদের স্বাধীন ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও যোগদানের অধিকার এবং উন্নত কর্মপরিবেশের জন্য যৌথ দর-কষাকষি করার অধিকারকে শক্তিশালী করতে বাংলাদেশকে আরও উৎসাহিত করি।
মার্কিন দূতাবাস বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেন শিল্প খাতের কার্যক্রম স্থিতিশীল কর্মসংস্থান, মানসম্পন্ন কর্মপরিবেশ এবং জীবিকা নির্বাহের উপযোগী মজুরি নিশ্চিত করে, যা বাংলাদেশের শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের উন্নতি নিশ্চিত করবে।
দূতাবাস আরও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। আমরা এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ এবং ঢাকায় একত্রিত হয়ে স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন, বাংলাদেশের শ্রমিক এবং তাদের নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করতে পেরে গর্বিত।