
বদিউল আলমের নেতৃত্বাধীন সংস্কার কমিশনের আমন্ত্রণে পত্রিকার সম্পাদকরা মতবিনিময় করেছেন। সভায় জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সংস্কার কমিশনকে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন সম্পাদকরা।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে সম্পাদকদের বৈঠক হয়।
মতবিনিময় সভায় প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হোসেন বলেন, নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ করতে রাষ্ট্রীয় খরচে নির্বাচনী প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। নারী আসনে সরাসরি ভোট হতে পারে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে। অথবা তিনটি আসন মিলে একটি নারী আসন হবে, যেখানে সরাসরি নির্বাচন হবে। সব নাগরিক যাতে তার পছন্দের প্রার্থী বাছাই করতে পারে সেটা আমাদের চাওয়া।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের দ্য ডেইলি স্টার বাংলা’র সম্পাদক গোলাম মোর্তোজা জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সংসদে নারী আসন বাড়িয়ে ১০০ করা ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তারা। দলের ভেতরে গণতন্ত্র কায়েম করার আইন করা দরকার বলে এ সময় মত দেন মি. মোর্তোজা।
আজকের পত্রিকার সম্পাদক ড. মো. গোলাম রহমান বলেন, গণমাধ্যমকে গুরুত্ব দিয়ে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হলে অনেক আগেই থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য আইনের পরিমার্জন, পরিবর্ধন করতে হবে। দলীয় সরকারের অধীনে অতীতে দেখেছি যেভাবে প্রভাবিত করা হয়, সেই সুযোগ যেন না থাকে। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন এই সময়ে তো সম্ভব না। এটা সংসদ থেকে করতে হবে। কেননা, সেখান থেকে করতে না পারলে কার্যকর হবে না।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন যেন জাতীয় নির্বাচনের আগে হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেন থাকে, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের উদ্যোগসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ সিনিয়র সাংবাদিকরা করেছেন। আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি, কেননা, আমরা যা ভাবছি সে সব বিষয়ই তারা বলেছেন। স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য যেমন বলেছেন, তেমনি গণমাধ্যম সঠিক দায়িত্ব পালন না করলে যেন শাস্তি ব্যবস্থা করা হয়, সেই সুপারিশও করেছেন তারা। এনআইডির ভিত্তিতে যাতে ভোটার তালিকা করা যায় আমরা সেটাও বিবেচনা করছি। কেননা, এতে ভোটের আগের দিনও কেউ ভোটার হতে পারবে। অনেক সুপারিশ আসছে-ব্যতিক্রমধর্মী এবং সাংঘর্ষিকও। আমরা সবগুলো পর্যালোচনা করে প্রস্তাব করবো।
ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারী আসনে নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ১০০ আসনে নারীরা সরাসরি নির্বাচনে অংশ নেবেন। এতে সংসদে ৪০০ আসন করতে হবে। লটারির মাধ্যমে প্রথমবার ১০০ আসনে, পরেরবার অন্য ১০০ আসনে এভাবে চারবারে চারশ আসনে নারীরা সরাসরি অংশগ্রহণ করবে। আর অন্য আসনগুলো নারী ও পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, কেরালায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এই পদ্ধতি আছে। তবে বাস্তবে সেখানে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল অনেক বেশি। নারীরা যাতে সবার মতো প্রথম শ্রেণির নাগরিকের মতো দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো নয়, এমন প্রস্তাব তারা করেছেন। এছাড়া সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নীতিমালা সুপারিশ করবো।