একটা সময় ছিল যখন অলরাউন্ডার হিসেবে র্যাঙ্কিংয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতেন সাকিব আল হাসান। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বছরের পর বছর নিজের শীর্ষস্থান ধরে রাখা যেন নিয়িম হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার জন্যই। অথচ সময়ের ব্যবধানে সেই ধারাবাহিকতার ছিটেফোঁটাও নেই। বর্তমানে আইসিসির ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের কোথাও নেই সাকিবের নাম।
সাধারণত পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে একজন খেলোয়াড় র্যাঙ্কিংয়ে উঠতে বা নামতে পারেন। কিন্তু সাকিবের ক্ষেত্রে র্যাঙ্কিং তালিকা থেকে তার নাম একেবারে মুছে গেছে। আইসিসি র্যাঙ্কিং থেকে একজন খেলোয়াড় বাদ পড়তে পারেন মোটাদাগে তিনটি কারণে। একটি নিষেধাজ্ঞা বা বহিষ্কার। ২০১৯ সালে জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করার দায়ে আইসিসি সাকিবকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা (এক বছর স্থগিত) দিয়েছিল। তখন র্যাঙ্কিং থেকে তার নাম সরানো হয়েছিল। তবে সাকিবের ক্যারিয়ারে এমন ঘটনা আর ঘটেনি।
দ্বিতীয় কারণ অবসর। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর সাকিব এই ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। ফলে ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তার নাম স্বাভাবিকভাবেই কেটে দেওয়া হয়েছে।
তৃতীয় কারণ দীর্ঘ অনুপস্থিতি। ওয়ানডে র্যাঙ্কিং থেকে সাকিবের নাম সরানোর কারণও এটাই। ওয়ানডে ফরম্যাটে সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর দিল্লিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। র্যাঙ্কিংয়ের নিয়ম অনুযায়ী, ৯ থেকে ১২ মাসের মধ্যে কোনো ম্যাচ না খেললে সেই খেলোয়াড়ের নাম র্যাঙ্কিং থেকে বাদ দেওয়া হয়।
ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার এখন শুধু টেস্টের র্যাঙ্কিংয়ে আছেন। যে সংস্করণে সর্বশেষ খেলেছেন সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে। যদিও পরবর্তী সময়ে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ কিংবা সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও তিনি ছিলেন না। এই ফরম্যাটে র্যাঙ্কিং আপডেটের জন্য ১২ থেকে ১৫ মাস সময় বিবেচনা করা হয়।
একসময়ের শীর্ষ অলরাউন্ডারের এমন অনুপস্থিতি বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একধরনের শূন্যতা তৈরি করেছে। র্যাঙ্কিংয়ের সেই শীর্ষস্থান হয়তো আরেকজন অলরাউন্ডার পূরণ করবেন, কিন্তু সাকিবের প্রভাব যে দীর্ঘদিনই ক্রিকেট অঙ্গনে থেকে যাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।