১৯ নভেম্বর, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর ১০০০তম দিন। প্রথম দিকে এই যুদ্ধে আকাশপথে হামলা চালানো হয়। ব্যবহার হয় ড্রোনও। পরে স্থল আর সমুদ্র যুদ্ধের বিস্তার ঘটে। মোতায়েন করা হয় ড্রোনবিধ্বংসী প্রযুক্তি। সেই সঙ্গে যুদ্ধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারও বাড়ানো হয়েছে। এ বছর ইউক্রেন ও রাশিয়ার সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ লাখ ড্রোন বানাচ্ছে। বেশিরভাগেরই আকার ছোট । প্রতিটির নির্মাণ ব্যয় মাত্র কয়েক শ ডলার। ইউক্রেনের প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান ড্রোন প্রতিরোধী ব্যবস্থা তৈরিতে যুক্ত।
রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশই যুদ্ধক্ষেত্রে মানুষের পরিবর্তে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলক কম হয়। ইউক্রেনের রাষ্ট্র–সমর্থিত প্রতিরক্ষা–বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ব্রেভওয়ান জানায়, দেশটিতে এখন ১৬০টির বেশি কোম্পানি যুদ্ধে ব্যবহৃত স্বয়ংক্রিয় বা মানববিহীন স্থলযান বানাচ্ছে। এগুলো রসদ সরবরাহ, আহতদের সরিয়ে আনা এবং দূরনিয়ন্ত্রিত মেশিনগান বহনে ব্যবহার করা হয়। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর কর্নেল কলসাইন হেপহিয়েস্টাস সম্প্রতি বাহিনী ছেড়ে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রপ্রযুক্তি ব্যবস্থা তৈরির কাজে যুক্ত হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, মানবচালিত মেশিনগানের পরিবর্তে এরই মধ্যে তাদের ছয়টি পণ্য যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা শুরু হয়েছে।
ইউক্রেনের কৌশলগত শিল্প–বিষয়কমন্ত্রী হারম্যান স্মেতানিন রয়টার্সকে বলেন, ‘দূরনিয়ন্ত্রিত অস্ত্র, বিশেষত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে পরিচালিত অস্ত্রের ব্যবহার যুদ্ধক্ষেত্রে ক্রমেই বাড়ছে। এটি হবে রোবটযুদ্ধ। তবে এই শিল্পে দক্ষ কর্মীর তীব্র সংকট রয়েছে। চারটি প্রতিষ্ঠান রয়টার্সকে জানিয়েছে, তারা প্রয়োজনীয় দক্ষ কর্মী খুঁজতে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। ৩৮টি প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান টেক ফোর্স। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক কেতেইরায়না মাইখালকো বলেন, দক্ষকর্মী না থাকায় ৮৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম ইউক্রেনের বাইরে সরিয়ে নিতে চাইছে কিংবা এরই মধ্যে সরিয়ে নিয়েছে।
ইউরি শেলমুক ইউক্রেনে সামরিক সরঞ্জাম তৈরির একটি প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা। ড্রোন সিগন্যাল জ্যামার তৈরির জন্য গত বছর কাজ শুরু করেন তিনি। ইউরি বলেন, শুরুর দিকে তার তৈরি সামরিক সরঞ্জামের চাহিদা কম থাকলেও এখন প্রতি মাসে আড়াই হাজার সরঞ্জাম তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি। ক্রয়াদেশের চাপ এত বেশি যে, এই সরঞ্জাম পেতে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে ক্রেতাদের।