
নির্বাচনের আগে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি ছিল সদ্য বিজয়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। বলেছিলেন দায়িত্ব নেওয়ার পরই থামিয়ে দিবেন এই সংঘাত। এ নিয়ে বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষগুলো আশায় বুকও বেঁধেছেন। কিন্তু বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হঠাৎ করেই ইউক্রেনকে অনুমতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে হামলা চালাতে।
মার্কিন দুই কর্মকর্তা ও একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। সূত্রগুলো বলেছে, ইউক্রেন সামনের দিনগুলোতে দূরপাল্লার হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। তবে অভিযান-সংক্রান্ত নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে তারা এ হামলা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। হোয়াইট হাউজও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। মার্কিন অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার সীমান্তসংলগ্ন অঞ্চল থেকে দেশটির ভূখণ্ডের গভীরে সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানোর অনুমতির জন্য কয়েক মাস ধরে অনুরোধ করে আসছিলেন ইউক্রেন।

সম্প্রতি নিজেদের বাহিনীর সম্পূরক শক্তি হিসেবে রণক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। এটি নিয়ে ওয়াশিংটন ও কিয়েভ উভয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের দেওয়া অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার গভীরে হামলা চালানোর অনুমতি দিয়েছে ওয়াশিংটন। রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে প্রথম হামলা সম্ভবত এটিএসিএমএস রকেট দিয়ে চালানো হবে। এসব রকেট ১৯০ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের হামলার বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। এমন সিদ্ধান্তকে বড় ধরনের উসকানি বলছে দেশটি। এদিকে, রোববারের ফের ইউক্রেনে বড় পরিসরে বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এ হামলায় ১২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৯০টি ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে একাধিক স্থানে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। ‘গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই বেশ কয়েকবার দেশটির জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা করেছে রাশিয়া। বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলার কারণে চলতি শীত যে আরও দুর্ভোগ নিয়ে হাজির হতে যাচ্ছে ইউক্রেনবাসীর জন্য তা বলাই বাহুল্য।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করবেন। এর দুই মাস আগে যুক্তরাষ্ট্র এ সিদ্ধান্ত নিল। এই এর ফলে ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত নিয়ে ওয়াশিংটনের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। ক্ষমতা নেওয়ার পর ট্রাম্প বাইডেনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন কি না তা স্পষ্ট নয়। ইউক্রেনকে যে পরিমাণে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছিল, ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে সেটার সমালোচনা করে আসছিলেন। এখন দেখতে হবে আসলেই কি কথা রাখবেন ট্রাম্প?