
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন অব্যাহতভাবে চলছে বলে অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদ। তেমন কোনো প্রতিকার না হওয়ায় অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন পরিষদের নেতারা।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ এনেছে ৪১টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত প্ল্যাটফর্ম সম্মিলিত সনাতন পরিষদ।
পরিষদের পক্ষ থেকে অভিযোগ এসেছে, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুঠপাট এবং আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) বাংলাদেশ সম্পর্কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চলছে। মূলত এরই প্রতিবাদে তারা এই সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন। সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবিও জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার আচার্য। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, অতীতেও সনাতনীদের ওপর অত্যাচার–নির্যাতন হয়েছে, তবে এর প্রতিকার হয় না।
উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার ও বিদ্বেষ ছড়ানোর মাধ্যমে ইসকনকে সনাতন ধর্মাদর্শ থেকে আলাদা করে দেখিয়ে বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্ঠা করা হচ্ছে বলেও লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, অথচ ইসকন সনাতন ধর্মাদর্শের অন্তর্ভুক্ত একটি অভিন্ন ধর্মীয় সম্পদায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কেউ কেউ ইসকন নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। বিশেষ উদ্দেশ্যে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সরকারকে এ বিষয়ে যথাসময়ে যথোচিত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে তারা বলেছে, অন্যথায় কোনো অনভিপ্রেত পরিস্থিতির দায়টা বর্তাবে সরকারেরই ওপর।
চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ উল্লেখ করে সম্মিলিত সনাতন পরিষদ বলেছে, সংস্থাটি যে ভূমিকা রেখেছে, তা কোনো কারণেই প্রত্যাশিত নয়।
সরকার পতন হলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার জের ধরে ক্ষতিপূরণসহ যে আট দফা দাবি জানিয়ে আসছে, তা বাস্তবায়নের দাবিও জানিয়েছে সম্মিলিত সনাতন পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সভাপতি হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। এ সময় আরও বক্তব্য দেন সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সহসভাপতি অশোক তরু, প্রধান সমন্বয়ক শ্যামল রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায়, মানিক চন্দ্র সরকার, বাংলাদেশ সনাতন পার্টির (বিএসপি) সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায় প্রমুখ।