
আলী যাকের; কারও কাছে তিনি ছিলেন বাতিঘর, কারও কাছে অনুপ্রেরণার উৎস, আবার কারও কাছে তিনি দারুণ অভিনেতা বা নির্দেশক। তবে সব কিছু ছাপিয়ে তিনি ছিলেন একজন সহজ মানুষ, সফল ব্যক্তিত্ব।
বাংলাদেশের টেলিভিশন, মঞ্চ এবং চলচ্চিত্রে অবিস্মরণীয় অবদান তাঁর। কেবল অভিনয় দক্ষতার জন্য নয়, বরং তার শক্তিশালী কণ্ঠ, গভীর আবেগপূর্ণ মঞ্চনাটক এবং চরিত্র বুননের বাস্তব শৈলী এই অভিনেতাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়।
১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেন আলী যাকের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করে থিতু হন অভিনয়ে। মায়ের চিকিৎসার জন্য কলকাতা গিয়ে তিনি শম্ভু মিত্র আর উৎপল দত্তের বেশ কটি নাটক দেখেছিলেন। সেই থেকে ভালোবাসা তৈরি হয় নাটকের প্রতি।
১৯৭২ সালে মুনীর চৌধুরীর ‘কবর` নাটকে অভিনয় দিয়ে শুরু হয় তার মঞ্চে যাত্রা। ১৯৭২ সালের জুনে আলী যাকের নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেন। তখন থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নাগরিকই ছিল তার ঠিকানা।
এরপর অসংখ্য বাংলা নাটক, টেলিভিশন নাটক, এবং চলচ্চিত্রে কাজের মধ্য দিয়ে জায়গা করে নেন ভক্তহৃদয়ে। তাঁর উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে ‘আজ রবিবার’, ‘বহুব্রীহি’, ‘তথাপি’, ‘পাথর দেয়াল` তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে আমি জাকের পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ আরও অনেক সম্মাননা।
দেশবরেণ্য গুণী এই অভিনেতা-নির্দেশককে হারানোর চার বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০২০ সালের এই দিনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর অবদান বাংলাদেশের নাটক ও চলচ্চিত্রের ইতিহাসে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। গুণী এই শিল্পীর প্রয়াণ দিবসে এশিয়ান পোস্ট পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে শ্রদ্ধাবনত স্মরণ।