
বাংলাদেশে ভারতের মাওলানা সাদকে আনার চেষ্টা করলে ঠেকানো হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন কওমিপন্থী আলেম-উলামারা।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) আয়োজিত ইসলামি মহা-সম্মেলনে উপস্থিত আলেম-উলামাদের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত আসে।
আলেম-উলামারা তাদের বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, সাদপন্থীরা আওয়ামী লীগের দোসর। আওয়ামী লীগ চলে গেলেও এখন তারা বর্তমান সরকারের উপদেষ্টাদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। তারা ইসলামকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। যদি দেশে মাওলানা সাদকে এনে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে সেটা মেনে নেবে না এই দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান মানুষ ।
বক্তারা বলেন, “আমরা জুবায়ের পন্থী নই, তাবলীগ জামাত সারাবিশ্বে যেভাবে চলছে, সেভাবেই আমরা চলব। যারা ইসলামের নামে বিদ্বেষ ছড়াবে, তাদের প্রতিহত করা হবে।”
মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী বলেন, মাওলানা সাদ নিজেকে তাবলিগের আমির বলে ঘোষণা দেয়। সাদ কোরআন হাদিস, আলেম-উলামা, আল্লাহর অলি, নবী ও স্বয়ং আল্লাহর বিরুদ্ধে কুফরি বক্তব্য দিতে থাকে৷ তাই তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে সারা বিশ্বের তাবলিগের মূলধারা। সাদের অনুসারীরা হচ্ছে কাদিয়ানী গ্রুপ। তারা ইসলামের মূলধারায় সৃষ্টি করছে বিভক্তি। তাবলিগের নামে কাদিয়ানীদের সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। বাংলাদেশে কাদিয়ানিরা অবাঞ্চিত।
শায়খুল হাদীস আজিজুল হকের ছেলে মাওলানা মাহবুবুল হক বলেন, “সাবধান! তাবলীগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। বাঘের লেজ দিয়ে কান চুলকালে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।”
হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, “আমরা ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াই করে এ সরকারকে বসিয়েছি। কেউ যদি রক্ত চক্ষু দেখায়, তবে আমরা তাদের চক্ষু উপড়ে ফেলবো।” তিনি আরও বলেন, “জাতির পথপ্রদর্শক হবে আলেমরা। তাবলীগের রাহবারও আলেমদের থেকেই হবে, অন্য কেউ নয়।”
সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য শাহরিয়ার মাহমুদ বলেন, “আগের আওয়ামী লীগ সরকার সাদের সব ফেতনা বাস্তবায়ন করেছে, বর্তমান সরকারকে আমরা বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, আওয়ামী লীগকে অনুসরণ না করে বিপরীত দিকে আসুন এবং তাবলীগের সমস্যা বুঝে সমাধান করুন। আমাদের পাশে ৫ লাখ মাওলানা ও মাসায়েখ রয়েছেন, তাদের সঙ্গে মাত্র ৪-৫ শত মানুষ আছে।”
এ সময় আলেমরা আরও বলেন, “তাবলীগের তৎপরতা কোনো অন্যায় বা অপকর্মে লিপ্ত হতে দেওয়া হবে না।”
নরসিংদীর জামিয়া কোরআনিয়া বৌয়াকুর মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা ইসমাইল নুরপুরী বলেন, আজকের এই সমাবেশ প্রমাণ করলো- সাদ অনুসারীরা বাতিল, গোমরাহ। আমরা চাই, তিনি যেন বাংলার জমিনে পা রাখতে না পারে। তারা যেখানেই যায় সেখানেই রক্ত ক্ষয় হয়।
এদিন, ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসাইনসহ হেফাজতে ইসলামের প্রধান শাহ মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।