
সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান আলী রিয়াজ জানিয়েছেন, চব্বিশ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানকে পাশ কাটিয়ে সংবিধান প্রণয়নের কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, সংবিধানে জনআকাঙ্খার বাস্তবায়ন ঘটাতে চাইলে নিঃসন্দেহে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের বিষয়টি রাখতে হবে। গণঅভ্যুত্থাণ না হলে এই কমিশন হতো না, এমনকি আমরা এখানে উপস্থিতও হতে পারতাম না।
জাতীয় সংসদের এলডি হলে রোববার (৩ নভেম্বর) বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রিয়াজ বলেন, বর্তমানে সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ যা কিছু হচ্ছে সবকিছুই হাজারো মানুষের আত্মদানের ফসল। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ফ্যাসিবাদীরা যা যা করেছে এবং তার বিপরীতে সাধারণ ছাত্র-জনতা যে ভূমিকা পালন করেছে, তা যদি সংবিধানে উল্লেখ না থাকে তাহলে কী লিপিবদ্ধ করব? কেন আমরা এতো মানুষের আত্মত্যাগ দেখলাম, তা তো লিপিবদ্ধ অবশ্যই করতে হবে।
আলী রিয়াজ বলেন, সংবিধানে থাকুক বা না থাকুক, নিঃসন্দেহে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পেছনে ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন আছে। সেটা তো নিঃসন্দেহে ডকুমেন্টেড হতে হবে। এই ইতিহাসকে পাশ কাটিয়ে বা এর বাইরে গিয়ে আমরা জাতি হিসেবে কিছুই করতে পারব না। আমি মনে করি চব্বিশের গণমানুষের বিপ্লবকে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করা শুধু জরুরিই নয়, অনিবার্যও বটে।
সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সংবিধান প্রণয়নে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিটিতে যারা আছেন, তারা প্রত্যেকেই সংবিধান নিয়ে দীর্ঘ বছর যাবৎ কাজ করেন। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, গত প্রায় দুই-আড়াই বছর যাবৎ সংবিধানটাকে বোঝার চেষ্টা করেছি। সুতরাং এই কমিশনকে অভিজ্ঞতাহীন বলার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, এককভাবে কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না বা নেবে না। কমিশনের প্রধান হিসেবে যদি আমারও কোনো ব্যক্তিগত অভিমত থাকে সেটি কমিশনকে জানাব। সবমিলিয়ে কমিশনই সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।