
রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ব্যানারে কয়েক শতাধিক মানুষ এই ঘটনায় অংশ নেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিভিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি মিছিল নিয়ে তারা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে আসতেই তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়। এতে অসংখ্য মানুষ আহত হন।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, হামলার শিকার হয়ে পরবর্তীতে আমরা আবার জড়ো হয়ে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে এখানে আসি। তারপর সন্ত্রাসীরা আমাদের দিকে বন্দুক তাক করলে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে।
মুঠোফোনে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু গণমাধ্যমকে বলেন, আজকের এ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ে আমরা দলীয় মিটিংয়ে বসেছি। মিটিং শেষে আমরা প্রতিক্রিয়া জানাব।
বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে অপর একটি গণমাধ্যকে তিনি বলেন, তাঁরা আগামী শনিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে সমাবেশ করতে পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছেন। গতকাল দলের নেতা-কর্মীরা সমাবেশের প্রস্তুতি সভার জন্য কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যার পর একটি মশালমিছিল নিয়ে একদল লোক তাঁদের কার্যালয়ে হামলা করেন। জাতীয় পার্টির কর্মীদের প্রতিরোধে হামলাকারীরা মার খেয়ে পালিয়ে যায়। আধা ঘণ্টা পর সংঘবদ্ধ হয়ে ফিরে তারা কার্যালয়ে আগুন দেয়।

ঘটনা সম্পর্কে নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদের নেতা হাসান আল মামুন রাতে ঘটনাস্থলে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শাহবাগে সমাবেশ শেষ করে আমরা বিজয়নগরে আসি। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।’
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ একই দিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্টে বলেন, ‘জাতীয় বেইমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত।’ এর কিছুক্ষণ পর হাসনাত আবদুল্লাহ আরেকটি পোস্টে লেখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে রাত সাড়ে আটটায় মিছিল নিয়ে তাঁরা বিজয়নগরে যাবেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা সারজিস আলম সাড়ে সাতটার দিকে ফেসবুকে একই রকম একটি পোস্ট দেন। তিনি লিখেছেন, ‘রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে আমরা বিজয়নগরে যাচ্ছি।’ পরে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি মিছিল বিজয়নগরের উদ্দেশ্যে বের হয়।
এর আগে রাত সোয়া আটটার পর বিজয়নগরে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের নিচতলায় আগুন দেওয়া হয়েছিল। তা নিভিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তখনো ভাঙচুর চলছিল।
পরে রাত ৯টার দিকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য ও সেনাসদস্য জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে আসেন। তাঁরা হামলাকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।