বাংলাদেশে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছেন ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ। এদের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। ‘বৈশ্বিক বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক-২০২৪ : সংঘাতের মধ্যে দারিদ্র্য’ শিরোনামের বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বৈশ্বিক বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক-২০২৪ অনুযায়ী, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে মানুষের জীবনযাত্রার মান। এক্ষেত্রে দারিদ্র্য সূচকে বাংলাদেশের মান ৪৫ দশমিক ১ শতাংশ। শিক্ষায় ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ ও স্বাস্থ্যে রয়েছে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ। সবমিলিয়ে দেশের চরম দারিদ্র্যে অতি মানবেতর জীবন যাপন করছেন ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ।
ইউএনডিপির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ১১০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছেন। তাদের প্রায় অর্ধেকই সংঘাতকবলিত দেশের বাসিন্দা। চরম দারিদ্র্যে থাকা জনগোষ্ঠীর ৮৩ শতাংশের বেশি বসবাস করেন আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। দক্ষিণ এশিয়ায় ২৭ কোটি ২০ লাখ দরিদ্র মানুষ এমন পরিবারে আছেন, যে পরিবারের অন্তত একজন অপুষ্টিতে ভুগছেন।
সূচক অনুযায়ী, দারিদ্র্যের স্তর অন্য দেশগুলোর চেয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে বেশি। এসব দেশে পুষ্টি, বিদ্যুৎ, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ক্ষেত্রে বড় বৈষম্য দেখা গেছে। চরম দারিদ্র্যে বসবাস করা ১১০ কোটির মধ্যে ৪৫ কোটি ৫ লাখ মানুষ সংঘাতের ছায়ায় রয়েছেন। ১৮ বছরের কম বয়সী প্রায় ৫৮ কোটি ৪০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে।
জাতিসংঘ বহুমাত্রিক দারিদ্র্য পরিস্থিতি বুঝতে বিশ্বের ১১২টি দেশের ৬৩০ কোটি মানুষের ওপর গবেষণা করেছে। এতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এক দশকের বেশি সময়ের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। এতে পর্যাপ্ত আবাসন, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, ভোজ্যতেল ও পুষ্টির মতো মৌলিক মানবিক সেবাগুলো পাওয়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি কেমন, তা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। শিশুদের স্কুলে উপস্থিতির হারও বিবেচনায় এসেছে।
এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২২ সালের সর্বশেষ তথ্য বলছে, বাংলাদেশের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে অতি দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন ৫ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। সর্বশেষ জনশুমারি অনুসারে, দেশে বর্তমানে জনসংখ্যা আছে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার। সে হিসাবে, দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ১৭ লাখ ৫৭ হাজার।