মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শীতকাল

ট্রেন্ডিং টপিক

রূপপুর প্রকল্প নিয়ে গণমাধ্যমের খবর উস্কানিমূলক, ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রসাটম

বিভিন্ন গণমাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে অনৈতিক আর্থিক লেনদেন...

নারীদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দ্বিতীয় সেঞ্চুরিয়ান ফারজানা

নারীদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি...

দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টকেও অভিশংসনের উদ্যোগ

দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া হান ডাক-সুকেও...

দুর্নীতির মামলায় সাবেক সচিব ইসমাইল গ্রেফতার

ঘুষ, বদলি, পদোন্নতি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির...

সিকিম যাবেন কিভাবে?

ঢাকা থেকে গ্যাংটক দেখুন এম আর জান্নাত স্বপনের ক্যামেরায়

সিকিম ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি রাজ্য। এটি জনপ্রিয় একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে বিশ্বব্যাপী খ্যাত। সিকিমের রাজধানী শহরের নাম গ্যাংটক। সিকিমের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে, আর এ কারণে পর্যটকরা ভিড় করেন সিকিমে। ভারতীয় বিভিন্ন রাজ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম জনসংখ্যার বাস সিকিমে। পূর্ব হিমালয় অঞ্চলের একটি অংশ সিকিম, আল্পাইন ও উপক্রান্তীয় জলবায়ুসহ সেখানকার জীব বৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত সিকিম।

এখানেই অবস্থিত কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বত। ভারতের সর্বোচ্চ ও পৃথিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বত শিখর এটি। বর্তমানে অনেকেই ভিড় করছেন সিকিমে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে এমনকি দেশের পর্যটকরাও সিকিমের অন্যন্য রূপ দর্শনে নিয়মিত সিকিম ভ্রমণে যাচ্ছেন। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, সিকিম ভ্রমণের খরচ কত কিংবা সেখানে গেলে কোন কোন স্থান ঘুরে দেখবেন।

এছাড়া থাকা-খাওয়ার বিষয় সম্পর্কেও ভালোভাবে ধারণা নিয়ে তবেই সেখানে যাওয়া উচিত, না হলে সমস্যায় পড়তে পারেন সেখানে গিয়ে। চলুন তবে সিকিম ভ্রমণ সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক-

সিকিম যেতে প্রথমে বাসে করে ঢাতকা থেকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা। সেখান থেকে ইমিগ্রেশন শেষে ভারতের বর্ডার ইমিগ্রেশন শেষ করে যেতে হবে ফুলবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে। এর সেখান থেকে বাসে কম খরচেই পৌঁছাতে পারবেন শিলিগুড়ি। সেখানে পৌঁছে সিকিম ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট অফিস থেকে সিকিম ভ্রমণের অনুমতি নিতে হবে। শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটকের দুরত্ব প্রায় ১১ কিলোমিটার। সড়কপত্রে ৬ ঘণ্টা সময় লাগবে। এক্ষেত্রে শেয়ার গাড়ি ভাড়া নিয়ে জনপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকা খরচ হবে। গাড়ি গ্যাংটক সিটি সেন্টারের ২ কিলোমিটার নিচে দেওরিালিতে নামাবে। এবার সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে নিজ গন্তব্যে পৌঁছান।

সিকিম ভ্রমণে যাওয়ার সেরা সময় হলো ফেব্রুয়ারি থেকে মে ও সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস। তবে যে কোনো সময়ই সেখানে যাওয়া যায়। যদিও শীতে রাস্তায় বরফে সাদা হয়ে যা

এ সময় চলাফেরায় বেশ কষ্ট হয়। অন্যদিকে বর্ষায় উত্তর সিকিমে ধস নামে বিভিন্ন স্থানে। চাইলে দক্ষিণ ও পশ্চিম সিকিমে বছরের যে কোনো সময়ই যেতে পারবেন। চারদিকে পাহাড় সাদা বরফে ঢাকা। যা আপনাকে দেবে এক অনাবিল আনন্দ। সেখানে গেলে নে হবে, এ আপনি কোথায় এলেন! উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি জনপ্রিয় স্থান হলো সিকিম। পূর্ব হিমালয়ের মাঝে অবস্থিত এই হিল স্টেশন।

আপনি এখান থেকে বিশাল কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাবেন। তিব্বতি সংস্কৃতির এক দারুণ জায়গা সিকিম। বিকেলে কোন ক্যাফেতে বসে কাটাতে পারেন, গরম- গরম মোমো ও থুকপা খেতে-খেতে।

সিকিমের দর্শনীয় স্থানসমূহ

তিব্বতি মনাস্ট্রি: তিব্বতি সংস্কৃতি বা তাদের জীবনশৈলী জানার জন্য মনাস্ট্রি যাবেন। এখানে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মনাস্ট্রি আছে। এগুলো হলো- রুমটেক, সুক লা খাং ও পেমাযাংসে। যেখানে বৌদ্ধ শিল্পকলা দেখতে পাবেন। নামগ্যাল ইনস্টিটিউট অব তিবেতলোজিতে গেলে আপনি এখানকার স্থানীয় সংস্কৃতির বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন।

সমগো বা চাঙ্কু লেক: অনেক উচ্চতায় (নাথুলা পাসের ভীষণ কাছে) চাঙ্কু লেক। এর মনোরম দৃশ্য, পরিষ্কার নীল পানি, বরফে ঢাকা পাহাড় এবং কনকনে ঠান্ডা বাতাস। ইয়াকের পিঠে বসে ঘুরতে পারেন। এই লেক গ্যাংটক থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে।

নাথুলা পাস: চাঙ্কু লেক যখন যাবেনই, তখন আর একটু গিয়ে নাথুলা পাস নিশ্চয়ই দেখে আসবেন। এর উচ্চতা ১৪ হাজার ১৫০ ফুট। যা প্রাচীন সিল্ক রুটের অংশ ছিল। এর একদম কাছেই হলো ভারত-চীন সীমানা।

বসন্তের ইয়ুম্থাং ফুলের উপত্যকা: স্থানীয়রা এই জায়গাকে ফুলের উপত্যকা বলে। যেখানে গেলে আপনি এখানকার জাতীয় ফুল – রডদেন্দ্রন ফুল ফুটতে দেখবেন। এখানেই রয়েছে শিন্গ্বা রডদেন্দ্রন স্যান্গ্চুরি। যেখানে আপনি ৪০ রকমের ফুলের প্রজাতি পাবেন।গ্যাংটক সিকিমের রাজধানী শহর হলোগ্যাংটক মূলত পূর্ব সিকিমের অন্তর্গত। যা বর্তমানে তিব্বতীয় বৌদ্ধ কেন্দ্র ও সিকিমের হিমালায়ান শীর্ষ থেকে ট্র্যাকিং করার জন্য হাইকারদের বেজ ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত। এখানের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের মধ্যে তাশি ভিউ পয়েন্ট থেকে কাঞ্চনঝঙ্ঘা ও আশপাশের পাহাড় দেখা যায়।

লাচুং: উত্তর সিকিমের অন্তর্গত তিব্বেতিয়ান বর্ডারের কাছে অবস্থিত লাচুং গ্রাম নদী দিয়ে বিভক্ত। গ্যাংটক থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই গ্রামে যেতে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। চারপাশের অদ্ভুত সুন্দর পরিবেশ ও ইয়ামথাং ভ্যালী যাবার পথে তিস্তা নদীর স্বচ্ছ নীল পানি ও দুটি অসাধারণ ঝরনা মনকে প্রশান্তি এনে দেয়। এছাড়া সিকিমের সুইজারল্যান্ড হিসেবে পরিচিত কাটাও মিডিল পয়েন্টথেকে সাদা বরফে ঢাকা পাহাড়ের সুন্দর ভিউ দেখা যাবে। এখানে আরও আছে ভিম নালা ফল খান্দা ওয়াটার ফলস এবং ট্র্যাকিং করার জন্য স্নো পয়েন্ট।

সাঙ্গু লেক: গ্যাংটক থেকে ৪০ কিলো দূরে পূর্ব সিকিমে অবস্থিত সাঙ্গু লেক। ভূ-পৃষ্ট থেকে এটি ৩ হাজার ৭৫৩ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এই বরফের হ্রদ সিকিমের অন্যতম একটি পর্যটন স্থান। গ্যাংটক থেকে সাঙ্গু লেকে যাওয়ার রাস্তা অদ্ভুত সুন্দর। স্নো ফলের মধ্যে বরফ দিয়ে খেলা করার প্রকৃত মজা এখানে না আসলে কখনোই বোঝা যাবে না।

ইয়ুকসোম: পশ্চিম সিকিমের একটি ঐতিহ্যবাহী শহর যেখানে কাঞ্জনজঙ্খা ঝরনা, ছোট ছোট লেক ও বৌদ্ধ মন্দির আছে। হাইকিং করার ও সুযোগ আছে এখানে।

ইয়ামথাং: এটি ভ্যালি অব ফ্লাওয়ারস নামেও পরিচিত। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ থেকে জুনের মধ্য সময়ে বিভিন্ন রঙের ফুলে পুরো ভ্যালি ঢেকে থাকে।

খরচ কত?

সিকিমে খাওয়া দাওয়া, যাতায়াত ও ঘুরাঘুরি বাবদ ৬ দিন ৭ রাত থাকতে জনপ্রতি ১৭-২২ হাজার টাকার মতো লাগবে। তবে সিকিমে ৬/৭ জনের গ্রুপ করে যাতায়াত করলে ও হোটেল রুম শেয়ার করলে খরচ অনেক কম হবে। সিকিমের নৈস্বর্গীক দৃশ্য দেখতে চাইলে ও ভ্রমণ সহজ করতে যোগাযোগ করতে পারেন নির্ভরযোগ্য ভ্রমণ উদ্যোগী সংস্থার সঙ্গে। ভ্রমণ উদ্যোগী সংস্থার প্যাকেজে ভ্রমণ করতে চাইলে জনপ্রতি খরচ পড়বে ২২-২৫ হাজার টাকা, ৫ দিন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে নিয়ে যাবে ও টুর শেষ করে আবার আপনাকে সেখানেই পৌঁছে দেবে।

কোথায় থাকবেন?

সিকিমের গ্যাংটক, পেলিং, লাচুং ও এম জি মার্গে থাকার জন্য অসংখ্য হোটেল, মোটেল ও হোম স্টে আছে। হোটেল অনুযায়ী দুই বেডের ভাড়া লাগবে ২-৫ হাজার টাকা। তবে একটু খোঁজখবর করলে ৫০০-১০০০ টাকার মধ্যে দু’জন রাত কাটানোর মতো রুম পাবেন।

কোথায় ও কী খাবেন?

সিকিমের সব খাবারই অর্গ্যানিক ও ফ্রেশ। গ্যাংটকের এম জি মার্কেট, লাল বাজার রোডে সস্তার মধ্যে মজার স্ট্রিট ফুড খেতে পারবেন। এছাড়া সেখানে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট আছে। যেখানে থুকপা, মম, গুনড্রুক স্যুপ, শা ফালেয়, তিব্বতিয়ান ব্রেড ও লাচ্ছির মতো খাবার খেতে পারেন।

সতর্কতা

>> সিকিম ভ্রমণে অবশ্যই শীতের ভারি কাপড়, জ্যাকেট, ছাতা, হাত ও পা মোজা, মাফলার, কান টুপি ও বরফে ঢাকা রাস্তায় হাঁটার জন্য অবশ্যই গাম বুট সঙ্গে নিতে হবে।

>> গ্যাংটক থেকে বিভিন্ন টুরিস্ট স্পটে যেতে প্রতিবার অনুমতি নিতে হয়। গাড়ির ড্রাইভারের উপর সে দায়িত্ব থাকে। তবে সঙ্গে অবশ্যই পাসপোর্ট, ভিসা, আইএলপি’র অনেকগুলো কপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি নিয়ে যাবেন।

>> গ্যাংটকে জনসম্মুখে ধূমপান, আবর্জনা ও থুথু ফেলা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই সতর্ক থাকবেন।

সংবাদ উৎসইউটিউব

সর্বশেষ সংবাদ

এমন আরো সংবাদ
এশিয়ান পোস্ট বিডি ডট কম

বগুড়ায় দুই ট্রাকের ধাক্কা, নিহত দুইজন

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকে দ্রুতগতির অপর একটি...

রূপপুর প্রকল্প নিয়ে গণমাধ্যমের খবর উস্কানিমূলক, ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রসাটম

বিভিন্ন গণমাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে অনৈতিক আর্থিক লেনদেন...