
বাংলাদেশ স্কাউটস-এর জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সারা দেশের মতো জয়পুরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলায় একযোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে কাব কার্নিভাল-২০২৫। বর্ণিল এই আয়োজনে জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এক হাজারেরও বেশি কাব স্কাউট অংশগ্রহণ করে।
সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দিনব্যাপী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে কাব স্কাউটরা নানা ধরনের সৃজনশীল ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমে যুক্ত হয়, যা তাদের নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা, সহমর্মিতা এবং দলগত দক্ষতা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই কাব স্কাউটদের নিয়ে সকালের ব্রিফিং এবং গ্রান্ড ইয়েলের মাধ্যমে আয়োজনের সূচনা হয়। পরে পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু হয়। সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিও বার্তায় কার্নিভালের উদ্বোধন ঘোষণা করেন কাব স্কাউটস-এর প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর বক্তব্য শিশুদের মাঝে উৎসাহ ও প্রেরণা জোগায়।
দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল ষষ্ঠকভিত্তিক বিভিন্ন স্টেশনে শিক্ষামূলক গেম, পরিবেশ সচেতনতা বিষয়ক আলোচনা, নাটক, মূকাভিনয়, আবৃত্তি, গান, নৃত্য পরিবেশনা এবং রাজা-মন্ত্রী রূপে অভিনয়ের মাধ্যমে শিশুদের কল্পনাশক্তি ও নেতৃত্ব বিকাশের বিশেষ আয়োজন। শিশুদের বিভিন্ন বাহনে (যেমন কাল্পনিক নৌকা, পালকি, ট্রেন বা ঘোড়া) চড়ে এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে যাওয়া, এবং প্রতিটি স্টেশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে মুদ্রা বা মার্বেল অর্জনের মতো কার্যক্রম এই আয়োজনকে আনন্দময় করে তোলে। কাব স্কাউটরা অংশগ্রহণে দক্ষতা দেখাতে পারলে পুরস্কার হিসেবে মোহর পায়, আর ব্যর্থ হলে একটি মোহর স্টেশন মাস্টারকে ফেরত দিতে হয়। দিনশেষে এই অর্জনের ভিত্তিতে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।

জয়পুরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলায় আয়োজিত এ কার্নিভালের বিভিন্ন ভেন্যুতে পরিদর্শক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক উপ-কমিশনার মোঃ সাহাদুল ইসলাম সাজু, জয়পুরহাট জেলা স্কাউটস-এর সহসভাপতি মোঃ আসাদুজ্জামান মুকুল, সম্পাদক মোঃ মাহমুদুল হাসান মুন্না এবং কোষাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল গনি। এছাড়াও প্রতিটি উপজেলার আয়োজনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অতিথিরা আয়োজন শেষে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “কাব কার্নিভালের মতো এমন আয়োজনে শিশুদের অংশগ্রহণ শুধু বিনোদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি তাদের আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্বগুণ ও সমাজ সচেতনতামূলক মানসিকতা গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ভবিষ্যতেও এমন আয়োজনে সক্রিয় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।