
নড়াইলের কালিয়ায় পূর্ববিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী ফরিদ মোল্যা (৫৮) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৮ জন।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের চিকিৎসার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঞ্চনপুর গ্রামের পিকুল চেয়ারম্যান ও তার অনুসারী মিলন মোল্যার সঙ্গে আতাউর রহমান আফতাব মোল্যার দীর্ঘদিন ধরে পূর্ববিরোধ চলে আসছে। দুইপক্ষের মধ্যে ইতোপূর্বে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। একাধিক মামলাও চলমান রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকালে মিলন মোল্যা পক্ষের সানোয়ার নামের এক ব্যক্তি নড়াইলে আদালতে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে প্রতিপক্ষের লোকজন মারপিট করে।
এর জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে চেয়ারম্যান পিকুল ও মিলন মোল্যা পক্ষের লোকেরা আতাউর রহমান আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করে। এ হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৮ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে আফতাব মোল্যা পক্ষের ফরিদ মোল্লাকে (৫৮) গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান।
এ পক্ষের অন্য আহতরা হলেন, সাবেক মেম্বার চম্পা বেগম (৪৫), করিম মুন্সি (৪৯), হুসাইন শেখ (১৮),আশরাফুল মোল্যা (৫০), বশির মুন্সি (৪৫), করিম মুন্সী (৩৭), জালাল মুন্সি (৪৭) প্রমুখ। এরমধ্যে গুরুতর আহত বশির মুন্সীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত অনেকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ বিষয়ে আফতাব মোল্লা জানান, বাবরা-হাচলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মোজাম্মেল হোসেন পিকুলের যোগসাজশে মিলন মোল্যা ও তার দলীয় লোকজন একের পর এক আমার লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে আহত করছে। এর আগে জাহিদ ও ফায়েককে কুপিয়ে আহত করে মিলনের লোকজন। চেয়ারম্যান পিকুল ও তার দলীয় লোকজন ইতোপূর্বে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়িভাবে কোপালে আমি প্রাণে বেঁচে গেলেও চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেছি।
মিলন মোল্যা পক্ষের আহতরা হলেন তৌহিদ মোল্লা (৫০), আলমিস শেখ (৩৫) নিরব মোল্লা (১২), হাসিব মোল্লা (১৫), কিবরিয়া শেখ (২৮), ওসমান মোল্লা (১৫), কামাল কাজী (৪০), তরিক শেখ (২৪), জাকারিয়া শেখ (২৫), দিদার শেখ (১৮) প্রমূখ।
এছাড়া শনিবার সকালে চেয়ারম্যান পিকুল, সাহেব আলী,আজিজুর, শরিফুল, হাসিবুর, লুৎফর, রজিবুলসহ ১০ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এছাড়া ভাঙচুর করা হয়েছে বাদশা শেখ ও কাক্কা শেখের বাড়ি।
বিএনপি কর্মী ফরিদ মোল্যাকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি নেতা ডা: আহমেদ শফিকুল হায়দার পারভেজ।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রাশিদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।