
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে এল.জি.ই.ডি সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ কাজে বাধা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহলের বিরুদ্ধে।
জেলার উখিয়া থানাধীন ২নং রত্নাপালং ইউনিয়নের অন্তর্গত দক্ষিণ রত্নাস্থ মোজাহের ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে উখিয়া থানায় প্রভাবশালী স্থানীয় তিনজনসহ অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সরকারি কাজে নিয়োজিত সহযোগী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
অভিযুক্তরা হলেন, হাসান মিস্ত্রি (৪৮), পিতা-অজ্ঞাত, আব্দুল আজিজের ছেলে বেলাল (৫৫) ও বদিউর রহমানের ছেলে মোঃ মুবিন (৪৫)। তারা প্রত্যেকেই দক্ষিণ রত্না মোজাহের ঘোনা এলাকার অধিবাসী।
থানায় দাখিলকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২০ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে অভিযুক্তরা অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনসহ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ মোজাহের যোন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন (সাইক্লোন সেন্টার) ভবনে এসে হানা দেয়।
এ সময় তারা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির প্রজেক্ট সুপারভাইজার মো. হুমায়ুন কবিরের কাছ থেকে ১০,০০০/-(দশ লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবী করেন। তিনি অবৈধ চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় বিবাবীগণ কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদেরকে বাধা দেন। ওই সময় সাইট সুপারভাইজার বাধা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে অভিযুক্ত হাসান মিস্ত্রি, বেলাল ও মুবিন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে মারধর করতে উদ্যত হন।
একপর্যায়ে অভিযুক্তরা সিমেন্ট, রডসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী নষ্ট করেন, যার আনুমানিক মূল্য ২,২০,০০০/-(দুই লক্ষ বিশ হাজার) টাকা। এ সময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা কৌশলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ সময় দাবীকৃত টাকা না পেলে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ কাজে নিয়োজিতদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন অভিযুক্তরা।
এমন পরিস্থিতিতে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এ প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা অভিযোগকারী আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, উল্লেখিত বিবাদীরা বেশ কিছু দিন ধরেই তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। এ বিষয়ে ঘটনার মাত্র এক দিন আগেই গত মঙ্গলবার আমরা স্থানীয় উপজেলা কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেনকে জানাই। তিনি তৎক্ষণাৎ এর খোঁজখবর নেন এবং সমাধানের কথা দেন। অথচ এর মাত্র একদিন পরেই এই ঘটনা ঘটলো।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাদের কারো সাথেই কথা বলা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় নানা অপকর্ম করে বেড়ান। যখন যে রাজনৈতিক দল প্রভাবে থাকে, তাদের ছত্রছায়ায় চলে।
এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন বলেন, আমরা এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা কাজে নিয়োজিতদের জানিয়েছি। তারা ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা গ্রহণে মাঠে নেমেছেন। পাশাপাশি বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিয়ে খোঁজখবর রাখছি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো: রোকনুজ্জামান খান বলেন, বর্তমানে জরুরি সরকারি কাজে বাহিরে আছি। আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোন সহায়তা চাইলে আমরা পাশে থাকবো।
এ বিষয়ে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: জহিরুল ইসলাম খান বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। এছাড়া থানায় এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ঘটনার তদন্ত করতে পুলিশ মাঠে নেমেছে। যথাযথ তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।