
শেরপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধের প্রতিবাদে ঝিনাইগাতি-শেরপুর-জামালপুর মহাসড়ক অবরোধ এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ১২ ইট ভাটার মালিকের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম মামলার তথ্যটি জানিয়েছেন।
এর আগে গত ৪ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে শহরের খোয়ারপাড় মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাজে ব্যবহৃত পরিবেশ অধিদপ্তরের গাড়িতে হামলা চালায় মালিক ও শ্রমিকরা।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উচ্চ আদালতের নির্দেশে বেশ কয়েকদিন থেকে শেরপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কাজ করছে প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুর ১২ ঝিনাইগাতি-শেরপুর-জামালপুর মহাসড়ক অবরোধ করে ভাটা শ্রমিকরা।
এদিকে, দুপুর ১টায় পরিবেশ অধিদপ্তর ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বের হওয়ার সময় শহরের খোয়ারপাড় মোড়ে গাড়িগুলো আটকে দেয় মালিক শ্রমিকরা। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাজে ব্যবহৃত পরিবেশ অধিদপ্তরের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে তারা। পরে একটি বড় মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রবেশ করে।
এদিকে, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ায় পুলিশের অনুরোধে মানববন্ধন স্থগিত ঘোষণা করে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে ইটভাটার শ্রমিকরা। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের শান্ত করতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডমিন) মিজানুর রহমান ভূঁঞা। পরে জেলা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহমেদ জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
এসময় শেরপুর সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর এহসান, শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুবায়দুল আলম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ শ্রমিকদের ও মালিকদের প্রতিনিধি হিসেবে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক সুশীল কুমার দাস জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশে শেরপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয়ে শ্রমিকরা সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কাজে ব্যবহৃত গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ১২ জন ইট ভাটা মালিকের নামীয় এবং আরও ৭ থেকে ৮শ মানুষের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দানের অভিযোগ এনে শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শেরপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সরকারি কাজে বাধাদানের ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া অভিযোগ পেয়েই আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, মোবাইল কোর্টের ওপর হামলা খুবই নেক্কার জনক বিষয়। মামলার গতিতে মামলা চলবে। সেই সঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশনা পালন করতে অবৈধ ইটভাটার উপর অভিযানের চলমান থাকবে।