
ঢাকার ধামরাইয়ে আলাদীনস পার্ক নামে একটি বিনোদন কেন্দ্রে পিকনিক করতে আসা শিক্ষার্থীদের সেখানকার কর্মচারীদের সঙ্গে রক্তাক্ত সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের মোবাইল হারানোকে কেন্দ্র করে পার্ক কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশত লোকজন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম।
এর আগে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ৫টার দিকে ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের সিতি এলাকায় আলাদীনস পার্কে ঢাকার মিরপুরের বনফুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পার্ক কর্মচারীদের এই সংঘাত ঘটে।
সংঘর্ষের সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিনোদন কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালান। আর শিক্ষার্থীদের বহনকারী কয়েকটি বাস ভাঙচুর করেন পার্কের কর্মচারীরা।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল সকাল ১০টার দিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৬৫০ জন ১২টি বাসে আলাদীনস পার্কে আসেন পিকনিকে। দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীরা তাদের মোবাইল ও অন্যান্য জিনিসপত্র লকারে রেখে ওয়াটার পার্কে নামেন। তবে পানি থেকে উঠে কয়েকজন শিক্ষার্থী লকার খোলা ও সেখানে মোবাইল খুঁজে পাননি।
পরে শিক্ষার্থীরা এ জন্য পার্ক কর্মচারীদের দায়ী করলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের মধ্যস্ততায় মীমাংসা হয়, তবে মোবাইল ফোন খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিকেল ৫টার দিকে বিনোদনকেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন না নিয়ে সেখান থেকে যেতে রাজি হন না। একপর্যায়ে তারা বিনোদনকেন্দ্রের কয়েকটি স্থাপনায় ভাঙচুর করেন। এ সময় বিনোদনকেন্দ্রের কর্মচারীরা তাদের ওপর চড়াও হন। এ সময় সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পার্কের কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের অন্তত আটটি বাসে ভাঙচুর চালিয়েছেন। সংঘর্ষে ২৫-৩০ শিক্ষার্থী ও ১০-১৫ জন পার্কের কর্মচারী রক্তাক্ত হন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এবং আহতদের উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে বনফুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক নাসির আফজাল বলেন, আমাদের ২০-২৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমরা মামলা করব। ক্ষতিপূরণের বিষয় রয়েছে।
আলাদীনস পার্কের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা নকিবুল হাসান রনি বলেন, আমাদের ১৫-১৬ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সবারই শরীরে রক্তাক্ত জখম। আহত সবাই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, বেড়াতে আসা শিক্ষার্থীরা বিনোদন কেন্দ্রটির লকারে তাদের মোবাইলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র রেখে গোসলে নামেন। পরে কয়েকজন শিক্ষার্থী লকার থেকে মোবাইল হারানোর অভিযোগ তুলেন। এ নিয়ে বিনোদন কেন্দ্রর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগবিতণ্ডা ঘটে। এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়ায় উভয় পক্ষ। এতে অন্তত ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী ও বিনোদন কেন্দ্রের ১০-১৫ জন আহত হন।