
টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে আজ রবিবার সকালে আখেরি মোনাজাতের সময় ড্রোন দ্বারা সৃষ্ট আতঙ্কে শতাধিক মুসল্লি আহত হয়েছেন। এদিন সকালে আখেরি মোনাজাত চলাকালে হঠাৎ মুসল্লিরা আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু করেন। ড্রোন মাটিতে পড়ার পর হওয়া শব্দ থেকে এই আতঙ্ক বলে জানা গেছে।
৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপের ইজতেমার আখেরি মোনাজাত শুরু হয় আজ রবিবার সকাল ৯টা ১১ মিনিটে আর শেষ হয় ৯টা ৩৫ মিনিটে। এ সময় একটি ড্রোন ভূপাতিতের ঘটনায় মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। মুসল্লিদের ছুটাছুটির এক পর্যায়ে অনেকেই আহত হন।
এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪০ জন। আখেরী মোনাজাত চলাকালে সকাল ৯টা ৩১ মিনিটে টঙ্গী স্টেশন রোডে ফ্লাইওভারের পূর্ব পাশে টঙ্গী-কালিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে এই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জের বাহাদুর সাদী ইউনিয়নের জুগলি গ্রামের লোকমান মিয়ার ছেলে আমজাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমার সামনে হঠাৎ তিনটি ড্রোন পড়ে গিয়ে বাঁশের সঙ্গে লেগে শব্দ হয়। এতে আতঙ্ক দেখা দিলে দৌঁড়াদৌঁড়ি শুরু হয়।
টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বেলায়েত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ড্রোন পড়ার আতঙ্কে অনেক মুসল্লি দৌঁড়ে হাসপাতালে আসেন। আহতদের মধ্যে টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ৪০ জনের মধ্যে রয়েছেন আবুল কালাম (৫৫), আলামিন (৩২), আজাদ (৩০), ওবায়দুল্লাহ (৩২), রাতুল (১৮), আব্দুল করিম (২৮) সাইফুল ইসলাম (৩৮), জাফর উদ্দিন (৩১) জয়নাল (২৪), মকবুল হোসেন (৬৪) সোহাগ (৬০), মোশারফ (৩০), কোরবান আলী (২৫), সাইফুল ইসলাম (৩৫), সালামত (১৮), মুস্তাকিন (৩৩), কবির হোসেন (৩০), মুবিন (১৮), আয়নাল হক (২২), মামুন হোসেন (২১), মো. বাসেদ (১৩), খোকন (৪৩), জুয়েল (২৫), কবির হোসেন (৪৬), নাজিম উদ্দিন (৪১), জবরুল (৩১), জয়নাল (৫৪), কাওছারুল আলম (২৮), রায়হান (২৭), জহরুল (২৮), আলি নেওয়াজ (৩৮), আফতাব উদ্দিন (৪৭) মো. আমান (২৮), আনোয়ার (৪৫), সোহেল (৩৫), ফজল হক (৪৫) ও মুজাফফর আলী (৪৪) প্রমুখ।
টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, শতাধিক মুসল্লি আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তারা ইজতেমার মোনাজাত চলাকালে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করার সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন।
টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফরিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ব্যাটারি শেষ হয়ে যাওয়ায় একটি ড্রোন পড়ে যায়। এর শব্দ থেকে আতঙ্কের সৃষ্টি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ জিএমপির অপরাধ দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, কামার পাড়া সড়কে ব্যাটারি শেষ হয়ে যাওয়ায় একটি সক্রিয় ড্রোন মাটিতে পড়ে যায়। গ্রামের সহজ সরল মানুষ এটা দেখে আতঙ্কে দৌঁড়াদৌঁড়ি শুরু করে। এ সময় কয়েকজন আহত হয়।
এদিকে, আগামীকাল ৩ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতে শেষ হবে। ৮ দিন বিরতি দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্ব বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবেন সাদ অনুসারীরা। ১৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার ৫৮তম আসর।