
বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের ৪৩ ক্যাটাগরির ‘জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (টেক)’ পদে যোগদানের জন্য জারি করা প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম আদালতের আদেশে স্থগিত করা হয়েছে।
আজ সোমবার বিচারপতি মো.আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।
এ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শওকত আকবরসহ ১৮ জনের প্রাথমিক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন আদালত। এ আদেশের ফলে তিন হাজার ৫৩৪ জনের সংশ্লিষ্ট পদে ২৯ জানুয়ারি যোগদান আটকে গেল বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার এ জেড এম নুরুল আমীন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম মাকসুদ উল্লাহ, রোকনুজ্জামান সুজা ও শফিকুল ইসলাম।
২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর এ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। পরে ২০২২ সালের ১৮ মার্চ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত ২৫ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত।
তবে এ নিয়োগ পরীক্ষায় ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস’ হয়েছে দাবি করে গত বছর কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
‘ফাঁস প্রশ্নের টাকায় নিজ পকেটের উত্তর মেলান আবেদ আলী, প্রশ্নফাঁস চক্রের ১১৫ অ্যাকাউন্টে ১২৫ কোটি টাকা লেনদেন’ শীর্ষক একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাকাউন্টটিতে সবচেয়ে বেশি টাকা জমা হয়েছে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে। ওই বছরের ১৮ মার্চ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ইনস্ট্রাক্টর ও জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার পরদিন ১৯ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত মাত্র পাঁচ দিনে অ্যাকাউন্টটিতে জমা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। এরপর ২৮, ২৯ ও ৩০ মার্চ যথাক্রমে ২০ লাখ, ১৭ লাখ ও ১৯ লাখ করে চেকের মাধ্যমে মোট ৫৬ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়।
এরপর গত বছরের ২৬ নভেম্বর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। মনোনীতদেরকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে ১০ম গ্রেডে নিয়োগে সাময়িকভাবে সুপারিশ করা হয়েছে। এরপর ২৩ জানুয়ারি তিন হাজার ৫৩৪ জনকে যোগদানের জন্য পৃথক প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে আইনজীবী ব্যারিস্টার এ জেড এম নুরুল আমীন জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর একই রকমভাবে রেলওয়ের নিয়োগ স্থগিত করা করা হয়েছিল। কিন্তু এখানে সেটা করা হয়নি। এছাড়া সিআইডিতে অভিযোগ এখনো তদন্তনাধীন। এরপরও ৩৫৩৪ জনকে যোগদানের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাই ১৮ জন প্রার্থী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট রিটের শুনানি নিয়ে প্রজ্ঞাপনগুলো ৩ মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেন। ফলে এদের নিয়োগের কার্যক্রম আটকে গেল।