
সরকারি কর্মকর্তাদের জনগণের সেবক উল্লেখ করে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া বলেছেন, ‘আমরা কেউ কারও গোলাম নই। আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের ভাই, বন্ধু ও সহায়ক। যারা সরকারি কর্মকর্তা– তারা হচ্ছেন সেবক, গোলাম নয়। এই কথাটা সবার মাথায় রাখতে হবে।’
মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যদের মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আইয়ুব মিয়া বলেন, ‘সবাই এখানে একমত হয়েছেন যে, প্রশাসন হতে হবে রাজনীতির প্রভাবমুক্ত। রাজনীতিমুক্ত আমরা বলবো না। রাজনীতির চাপ বা প্রভাবমুক্ত হয়ে আইনের বাইরে যেন আমাকে কিছু করাতে না পারে। জনপ্রশাসন হতে হবে নিরপেক্ষ। সেখানে শুধু জনগণেরই সেবা করবে। কোনো সাহেব বা নেতার দিকে তাকানোর দরকার নেই। সেটা নেতার পক্ষেও যেতে পারে বিপক্ষেও যেতে পারে। রাষ্ট্রের মেশিনারি হিসেবে আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা আশা করব চাঁদপুর থেকেই এই বিপ্লব শুরু হবে।’
আইয়ুব মিয়া আরও বলেন, ‘আজকের এই সভায় একজন বক্তা বলেছেন নিজেদের আগে সংস্কার করতে হবে। কথাটা ভালো লেগেছে। আজকে এ সভা থেকে আমরা একমত যে যারযার অবস্থান থেকে নিজেকে সংস্কার করব এবং সেটাকে রোল মডেল হিসেবে চাঁদপুরকে প্রতিষ্ঠা করেন। চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আপনারা নিজেদের মধ্যে সংস্কার আইন শুরু করেন। সবকিছু আইনকানুন বা কাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ধ না। আপনার আচরন এটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ।’ ‘জনপ্রশাসনের দুয়ার তৃণমুল বা প্রান্তিক জনগণের জন্যে খোলা থাকতে হবে। তার অভিযোগ নিয়ে সে যেন বলতে পারে।’ যোগ করেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের এই সদস্য।
সভায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মো. হাফিজুর রহমান ভূঞা ও মেহেদী হাসান। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব রাখেন-পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব, সিভিল সার্জন ডা. নুর আলম দীন, সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ কে এম মাহবুবুর রহমান ও জেলা তথ্য কর্মকর্তা তপন বেপারী।
রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব রাখেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিম উল্ল্যাহ সেলিম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহাজাহান মিয়া, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জেলা সভাপতি তোফায়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, হেফাজতে ইসলাম জেলার সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাহবুবুর রহমান, জেলা গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন।
সাংবাদিকদের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব রাখেন- রহিম বাদশা, আব্দুল আউয়াল রুবেল, তালহা যোবায়ের ও কে এম সালাউদ্দিন।
সুশীল সমাজ ও অন্যান্যদের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব রাখেন- আইন কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট কোহিনুর বেগম, সরকারি মহিলা কলেজের ভাইস–প্রিন্সিপাল প্রফেসর ইকবাল রহমান, পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ লে. মো. সোয়েব, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. কাজী হাশেম, উইমেন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মনিরা আক্তার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব রাখেন- শিক্ষার্থী সাগর হোসেন, মো. রবিউল আলম, রাহাত।