
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা প্রবীর মিত্রকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফুসফুসের সমস্যা ও অক্সিজেন স্বল্পতাসহ বেশ কিছু কারণে সম্প্রতি তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রবীর মিত্রের ছেলে মিথুন মিত্র।
শনিবার বিকেলে অভিনেতার ছেলে মিথুন মিত্র বলেন, বাবা ভালো নেই। বয়সের সঙ্গে কিছু শারীরিক জটিলতার কারণে গত ২২ ডিসেম্বর বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে তার ফুসফুসের সমস্যা ধরা পড়েছে। বর্তমানে অক্সিজেনের সঙ্গে ইন্টারনাল ব্লিডিং হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্লাটিলেটও কমে গেছে। তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে। তবে চিকিৎসকরা তাদের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, প্রবীর মিত্র চাঁদপুর শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। বংশপরম্পরায় পুরনো ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা তিনি। তার পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। তিনি প্রথম জীবনে সেন্ট গ্রেগরি থেকে পোগজ স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র ২০০০ সালে মারা গেছেন। তার এক মেয়ে তিন ছেলে। ছোট ছেলে ২০১২ সালে ৭ই মে মারা গেছেন।

১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম প্রবীর মিত্র ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। যদিও চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রবীর মিত্র ‘নায়ক’ হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এরপর চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেও তিনি পেয়েছেন দর্শকপ্রিয়তা।
‘তিতাস একটি নদীর নাম,জীবন তৃষ্ণা, সেয়ানা, জালিয়াত, ফরিয়াদ, রক্ত শপথ, চরিত্রহীন, জয় পরাজয়, ‘অঙ্গার, মিন্টু আমার নাম, ফকির মজনু শাহ, মধুমিতা, অশান্ত ঢেউ, অলংকার, অনুরাগ, প্রতিজ্ঞা, তরুলতা,গাঁয়ের ছেলে,পুত্রবধূ’সহ চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
অভিনয়ের সঙ্গে খেলাধুলাতেও সাক্ষর রেখেছেন তিনি। ষাটের দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেটে ক্যাপ্টেন হিসেবে খেলেছেন প্রবীর মিত্র। একই সময় তিনি ফায়ার সার্ভিসের হয়ে ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন। এছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবলও খেলেছেন গুণী এই অভিনেতা।
১৯৮২ সালে তিনি বড় ভাল লোক ছিল চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৮ সালে আজীবন সম্মাননা বিভাগে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়।