
সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ না গ্রহণ করলে আগামীতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংকট তীব্র আকার ধারণ করবে। উদ্ভুত সংকট কাটাতে চীন-ভারতসহ আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী এমনকি আরাকান বাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগের পরামর্শ দিচ্ছেন নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। তবে মিয়ানমারে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকায় প্রত্যাবাসন চ্যালেঞ্জিং হবে বলেও মত বিশ্লেষকদের।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক জান্তা ও আরাকান আর্মির সংঘাতের জেরে সম্প্রতি দেশে ঢুকেছে ৮০ হাজার রোহিঙ্গা। আরও প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা ঢোকার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

এরই মধ্যে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের প্রায় পৌনে ৩০০ কিলোমিটার সীমানা আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে গেছে। কমপক্ষে ৩০টি পয়েন্ট দিয়ে প্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। এমন পরিস্থিতিতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সহজ হবে না বলে মনে করছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্ট্রা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, ‘পরিস্থিতি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। আমাদের মূল লক্ষ্য এই মানুষগুলোকে (রোহিঙ্গা) অধিকার ও নিরাপত্তাসহ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। প্রত্যাবাসনের বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং হলেও সরকার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া যত দেরি হবে, দেশের জন্য তা তত বেশি ঝুঁকি বয়ে আনবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারপরও সব পক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের তাগিদ তাদের।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মাসুদ রাজ্জাক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়টি আলোচনায় ধরে রাখতে হবে। এর পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত শক্ত করতে হবে। রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। যেসব রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নিচ্ছে তারা একসময় জন্মসূত্রে নানা অধিকার চাইবে, যা আমাদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে।’

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে প্রয়োজনে সব পক্ষের সাথে যোগাযোগ করার কোনো বিকল্প নেই।’
সশস্ত্র বাহিনীর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে ঢুকেছে প্রায় প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা। তাদের ফেরত পাঠাতে দেশটির সঙ্গে বেশ কয়েকটি চুক্তি সই হলেও গত ৮ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও আনুষ্ঠানিকভাবে ফিরত পাঠানো যায়নি।