
বাংলাদেশের সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলাম দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে এ আদেশ দেন। চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মফিজুল হক ভূইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিন শুনানিতে চিন্ময়ের পক্ষে ছিলেন অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবীর একটি দল। রায়ের পর অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘সবকিছু শোনার পরে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন। আমরা এখন উচ্চ আদালতে যাব।`
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ নভেম্বর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চিন্ময় দাসের জামিন না মঞ্জুর হলে ওইদিনই চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ৩ ডিসেম্বর। কিন্তু ওইদিন চিন্ময়ের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষও শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করেন। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জামিন শুনানির জন্য ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিচারপ্রার্থীদের আদালত প্রাঙ্গণে ঢোকার আগে কাগজপত্র যাচাই করা হয়।
এর আগে ১১ ও ১২ ডিসেম্বর রবীন্দ্র ঘোষ নামে এক আইনজীবী চিন্ময়ের জামিন শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন না করায় আদালত নাকচ করে দিয়ে পূর্ব নির্ধারিত তারিখে জামিন শুনানির দিন রাখেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ নভেম্বর বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে মহানগর ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এ নিয়ে ওই দিন বিক্ষোভ করেন ইসকন অনুসারীরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিক্ষোভকারীরা। দুপুর পর বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত এলাকায় মসজিদ-দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এসময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।
একপর্যায়ে বিকেলে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীত গলিতে একদল ইসকন অনুসারীর হাতে খুন হন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম। এ ঘটনায় ২৯ নভেম্বর দিবাগত রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। একই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় আরও কয়েকটি মামলা দায়ের হয়।