
ইউক্রেন হয়ে ইউরোপে যাওয়া সোভিয়েত যুগের পাইপলাইন দিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে রাশিয়া। আজ বুধবার নতুন বছর শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। পরিবহনসংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ শেষ ও কিয়েভ চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করতে রাজি না হওয়ায় এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে।
ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের সবচেয়ে পুরোনো লাইন ছিল এটি। তবে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ অধিগ্রহণের পর ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার উত্তেজনা তৈরি হয়। একই বছর থেকে রাশিয়ার কাছ থেকে গ্যাস কেনা বন্ধ করে দেয় ইউক্রেন।
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করার বিষয়ে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, আমরা আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে রাশিয়াকে শত শত কোটি ডলার আয় করতে দেব না।

সর্বশেষ ২০২২ সালের রুশ বাহিনীর পূর্ণমাত্রার ‘সামরিক অভিযানের’ পর দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাছে। এমন অবস্থায় নিজেদের ওপর দিয়ে যাওয়া গ্যাসলাইনটি বন্ধ করে দিলো ইউক্রেন।
টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি কোম্পানি গাজপ্রম বলেছে, ইউক্রেন এসব চুক্তি নবায়ন করার বিষয়টি বারবার ও স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করায় ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দেশটির ভূখণ্ড ব্যবহার করে গ্যাস সরবরাহের কৌশলগত ও আইনি সক্ষমতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গাজপ্রম।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মস্কোর স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ইউক্রেনের ভূখণ্ড দিয়ে ইউরোপে পরিবহনের জন্য রাশিয়ার কোনো গ্যাস সরবরাহ করা হয়নি।

ইউক্রেনের জ্বালানিমন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কো বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ইউক্রেনের ভেতর দিয়ে রুশ গ্যাস পরিবহন বন্ধ করা হয়েছে।
ইউক্রেনের জ্বালানিমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা রাশিয়ার গ্যাস পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছি, যা একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। রাশিয়া তাদের বাজার হারাচ্ছে,তারা আর্থিক লোকসানে ভুগবে। ইউরোপ এরই মধ্যে রুশ গ্যাস থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে, ইউক্রেনের এই লাইনটি বন্ধ হয়ে গেলেও কৃষ্ণসাগরের তলদেশে থাকা তুর্কস্ট্রিম পাইপলাইন দিয়ে এখনো ইউরোপে গ্যাস রপ্তানি করছে রাশিয়া। তুর্কস্ট্রিমের দুটি লাইন রয়েছে। একটি দিয়ে তুরস্কের বাজারে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। অন্যটি হাঙ্গেরি, সার্বিয়াসহ মধ্য ইউরোপের ক্রেতাদের কাছে গ্যাস সরবরাহ করে।