
বাংলা সাহিত্যে পল্লী কবি উপাধিতে ভূষিত জসীমউদ্দীন এমনই এক ব্যক্তিত্ব যিনি আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে লালিত প্রথম এবং পূর্ণাঙ্গ আধুনিক কবি। সৃষ্টিশীল এই মহতির ১২২তম জন্মবার্ষিকী আজ রোববার (১ জানুয়ারি)।
”তুমি যাবে ভাই, যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়, এইখানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে, ‘ও বাবু সেলাম বারে বার, আমার নাম গয়া বাইদ্যা বাবু বাড়ি পদ্মা পার।“
এরকম বহু জনপ্রিয় কবিতা ও গান রচনার মধ্য দিয়ে আবহমান গ্রাম-বাংলার মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার চিত্রকার পল্লিকবির স্মরণে দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে নানা কর্মসূচি। এ উপলক্ষে ফরিদপুরের বিভিন্ন সংগঠন থেকেও নেওয়া নানা কর্মসূচি।
ঐতিহ্যবাহী বাংলা কবিতার মূল ধারাটিকে নগরসভায় নিয়ে আসার কৃতিত্ব জসীমউদ্দীনের। তার নকশী কাঁথার মাঠ ও সোজন বাদিয়ার ঘাট বাংলা ভাষার গীতিময় কবিতার উৎকৃষ্টতম নিদর্শনগুলোর অন্যতম। তার কবিতা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
১৯০৩ সালের এই দিনে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা গ্রামে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন জসীমউদ্দীন। কবর, নিমন্ত্রণসহ অনেক স্মরণীয় কবিতা, সোজন বাদিয়ার ঘাট, নকশি কাঁথার মাঠসহ অনেক কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ রচনা করে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। ১৯৭৬ সালের ১৪ মার্চ ৭৩ বছর বয়সে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ওইদিনই ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের পৈত্রিক বাড়িতে ঐতিহাসিক ‘ডালিম গাছের’ তলায় তাকে দাফন করা হয়।
পল্লিকবির ১২২তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে ফরিদপুরের সরকারি-বেসরকারি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল সাড়ে ৯টায় কবির সমাধীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ, ৯টা ১৫ মিনিটে কবির বাড়ির প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা এবং আলোচনা সভা শেষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিলের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সভাপতি ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াসিন কবির। জেলা পরিষদ ও জসীম ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজক।