
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে স্থলবন্দর স্টেশন কুলি শ্রমিকের নতুন কমিটি নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। গত ২৬ ডিসেম্বর পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর ও স্টেশন কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এতে সভাপতি হিসেবে জফির আলী ভোলা ও নুর আমিনকে সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে এনিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর স্থলবন্দরের বর্তমান কমিটি নবগঠিত কমিটিকে গ্রহণযোগ্য নয় বলে দাবি করেছে।
বর্তমান কমিটির সভাপতি ফজলুল হক ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম প্রধান জানান, শ্রম আইন এবং গঠনতন্ত্র অনুসারে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া কারও সভা আহ্বানের সুযোগ নেই। বর্তমানে আমরা নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫ সাল পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনার অধিকার সংরক্ষণ করি।
রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর রংপুর, শ্রম আদালতে মামলার বরাত দিয়ে তারা মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিকে বেআইনি উল্লেখ করে সাধারণ সভায় প্রতিনিধি প্রেরণ স্থগিত করেন এবং বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করেন। ফলে ১১ ডিসেম্বর বুড়িমারী স্থলবন্দর ও কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের আদৌ কোনো সভা অনুষ্ঠিত হয়নি।
তারা আরও জানান, যে নির্বাচন তারা দেখিয়েছে সেটির বিষয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মী, স্থলবন্দরের অন্যান্য অংশের কর্মকর্তা, শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দও অবগত নয়। এছাড়া যারা নির্বাচিত হয়েছে মর্মে দাবি করেন তারাই মুলত শ্রমিক নন। বর্তমান কমিটির আওতাধীন শ্রমিকদের তিন সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হয়, যেটি প্রমাণ করে আমাদের চলমান কমিটির বিরুদ্ধে তাদের ষড়যন্ত্র আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরকে কতটা অস্থিতিশীল করে তুলবে। সুতরাং তাদের এমন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সাজু, মুকুল, ফরিদুল, আলম বাদশাসহ আরও অনেক শ্রমিক জানান, আমরা নিবন্ধিত ১৪৩৮’র শ্রমিক হয়ে জানি না নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব? আমরা এই কমিটি মানি না, কারণ বর্তমান কমিটির মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি। এই ঘটনায় বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর মান্নান ও বুড়িমারী স্থলবন্দর লোড-আনলোড লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম নতুন কমিটিকে অগ্রহযোগ্য দাবি করে বলেন, সুন্দর পরিবেশের স্থলবন্দরে তারা বিভ্রান্তিকর ও বিশৃঙ্খলা করার পায়তারা করছে। এনিয়ে শ্রমিকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এটা রীতিমতো শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণার সামিল।
নবগঠিত কমিটির সভাপতি জফির আলী ভোলার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ‘ওরা কারা? ওরা যদি অফিস থেকে অনুমতি নিয়ে কমিটি করতে পারে আমরা যাবো না। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন হয়েছে দাবি করে জফির আলী ভোলা বলেন, ওরা মুলত আমাদের সংগঠনের কেউ না। আর নির্বাচনের বিষয়ে আমি আদালতে জবাব দেবো।’
নির্বাচনে মোট কত ভোট পেয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে জফির আলী ভোলা তাৎক্ষণিক সঠিক সংখ্যা জানাতে ব্যর্থ হন। এছাড়াও প্রশাসন অসহযোগিতা করেছে দাবি করেন তিনি।