
চাঁদপুরের মেঘনায় জাহাজে সাত শ্রমিক হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে চলছে সারা দেশে পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট। ধর্মঘটে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে বন্দরগুলোতে। ব্যাহত হচ্ছে পণ্য খালাস কার্যক্রম। আটকা পড়েছে তেল-সারসহ হাজার হাজার টন পণ্য।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে এই ধর্মঘট। শুক্রবারও সারা দেশে বন্ধ ছিল সকল প্রকার পণ্যবাহী নৌযান চলাচল।
ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে নৌঘাট থেকে পণ্য ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। বিদেশি জাহাজ হচ্ছে না পণ্য খালাস। এতে সারা দেশে চাল, ডাল, গম, তেলসহ সব ধরনের পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা শ্রমিকদের।

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর ও ১৭টি ঘাটের লাইটারেজ জাহাজ ও নৌ যানের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ৩৫টি জাহাজে বোঝাই করা অর্ধ লাখ টন পণ্য আটকে আছে।
শ্রমিক নেতারা বলছেন, নৌ যান শ্রমিকেরা কাজ ফিরতে প্রস্তুত। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি আদায়ে কোনো আশ্বাস তারা পাচ্ছেন না।
চট্টগ্রাম জাতীয়তাবাদী নৌযান শ্রমিক কর্মচারী দলের সদস্য মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা ধর্মঘট পালন করছি। চাঁদপুরে নৌযানে সাতজন হত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। খুনিদের আইনের আওতায় এনে ফাঁসিতে ঝুলান হোক।’
চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ নৌযান মাস্টার-ড্রাইভার ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুফ বলেন, ‘নৌরুটে কোনো আইনের শাসন নাই। আমরা প্রতিনিয়ত হামলার শিকার হচ্ছি। গত তিন বছর এই হামলা আরও বেড়ে গেছে। আইনের শাসন না থাকার কারণে চাঁদাবাজি হয় আমাদের এই রুটে।’

এদিকে, ধর্মঘটের কারণে চাঁদপুর নদীবন্দর থেকে কোনো পণ্যবাহী জাহাজ লোড-আনলোড হয়নি। এতে প্রায় ৫০০ লাইটারেজ ও কার্গো জাহাজে পণ্য আটকা পড়েছে। শ্রমিকেরা বলছেন, যে জাহাজে তাঁদের চলাচল করতে হয়, জীবিকা নির্বাহ করতে হয়, সেখানে কোনো নিরাপত্তা নেই।
খুলনার মোংলা এবং নোয়াপাড়ায় শতাধিক লাইটার জাহাজ নোঙর করে আছে। একই পরিস্থিতি পায়রা বন্দরে। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর নৌবন্দরে কর্মবিরতির প্রভাবে শতাধিক জাহাজে আটকে আছে প্রায় ৫ হাজার টন জ্বালানি তেল, সারসহ বিভিন্ন পণ্য। নারায়ণগঞ্জেও কর্মবিরতির কারণে স্থবির বন্দরের কার্যক্রম।
সারা দেশে ১০ হাজার পণ্যবাহী জাহাজে প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ করেন।