
জুলাই আন্দোলনে সাভারের আশুলিয়ায় ছয় তরুণের লাশ পোড়ানোর মামলায় মুকুল চোকদার নামের পুলিশের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাঁকে আগামী ২৬ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিন শুনানিতে অংশ নেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন। এ সময় বি এম সুলতান মাহমুদসহ অন্য প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
শুনানিকালে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন ট্রাইব্যুনালকে জানান, দোহার থানায় কর্মরত ছিলেন পুলিশ সদস্য মুকুল চোকদার। সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ থেকে আরও একজন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, কিশোরগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা পুলিশ সদস্যের নাম মালেক। গতকাল বুধবার আদালত বন্ধ থাকায় সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তাঁকে উপস্থাপন করা হয়। এখন তিনি কিশোরগঞ্জে বন্দী আছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় ট্রাইব্যুনালে নথি পাঠানো হবে, তারপর এ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
সবচেয়ে নৃশংস ঘটনাগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর পুলিশ ভ্যানে রেখে আগুন লাগিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা। যখন এসব মরদেহে আগুন দেওয়া হচ্ছিল, তখন একজন জীবিত ছিলেন। জীবিত থাকা অবস্থায় তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। এই নৃশংসতার সঙ্গে যেসব ব্যক্তি সরাসরি জড়িত, তাঁদের মধ্যে দুজনকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের একজন কনস্টেবল মুকুল চোকদার।
তাজুল ইসলাম বলেন, মুকুল চোকদার কনস্টেবল হলেও ওই ভয়াবহ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির দিনই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল বন্ধের দিন থাকায় আজ তাঁকে ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনার মামলা (বিবিধ মামলা) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নথিভুক্ত হয়। সে দিনই ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও সেখানে কর্মরত চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।