সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন নারীবিষয়ক মন্ত্রী আয়শা আল-ডিবস বলেছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধ জর্জরিত দেশটি পুনর্গঠনে নারীদের অবদান রাখার সুযোগ দেবে তার প্রশাসন।
গতকাল রোববার আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আয়শা আল-ডিবস বলেন, সিরীয় নারীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় সম্পৃক্ত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে যোগ্যতাসম্পন্ন নারীদের নিয়োগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সিরিয়ার সব প্রদেশ ও সম্প্রদায়ের নারীদের আসন্ন জাতীয় সম্মেলনে অংশ নিতে উৎসাহ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের এই নারী মন্ত্রী। ওই সম্মেলনে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।
গত ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দামেস্ক দখলের মধ্য দিয়ে পতন হয় স্বৈরাচার বাশার আল-আসাদ সরকারের। বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় সিরিয়ায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের পারিবারিক শাসনের অবসান হয়।
বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের নেতৃত্বে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। একসময়ে আল-কায়েদার সহযোগী এইচটিএসকে পশ্চিমা দেশগুলো সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে এইচটিএস বেশ সংযত আচরণ করছে।
বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার কারাগারগুলো থেকে বিরোধী যোদ্ধারা মুক্ত হয়েছেন। ধারণা করা হয়, বিনা বিচারে হাজার হাজার মানুষকে বাশার আল-আসাদের শাসনামলে কারাগারগুলোয় বন্দী রাখা হয়েছিল।
নারী বন্দীদের মুক্তি ও তাদের কল্যাণের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে বলে জানান আয়শা আল-ডিবস। সেই সঙ্গে তিনি জানান, কারাগারগুলোয় বন্দী নির্যাতনের জড়িত কারা কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, সাবেক বন্দী নারীদের পুনর্বাসনের জন্য তাদের মনস্তাত্ত্বিক সহায়তার প্রয়োজন। তাদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও আইনি সুরক্ষার প্রয়োজন, যাতে তারা কারা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিতে পারেন।
গেল শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের নারীবিষয়ক মন্ত্রী পদে আয়শা আল-ডিবসের নিয়োগের কথা জানানো হয়। নতুন প্রশাসনে নিয়োগ পাওয়া প্রথম নারী তিনি। তিনি মূলত অধিকারকর্মী হিসেবে পরিচিত। এর আগে উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের ইদলিব প্রদেশে দাতব্য কাজে যুক্ত ছিলেন। প্রতিবেশী তুরস্কের একটি সিরীয় শরণার্থীশিবিরেও কাজ করেছেন তিনি।