সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানির অনুমতি চেয়ে করা আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত। জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া মামলায় এই সিদ্ধান্ত দেন আদালত।
আজ বুধবার অবকাশকালীন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলাম এই আদেশ দেন। চিন্ময়ের পক্ষে আইনজীবীর ওকালতনামা না থাকায় আবেদন নাকচ করা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি আগামী বছরের ২ জানুয়ারি ধার্য রয়েছে। তবে আজ এ মামলার অন্য দুই আসামির জামিন শুনানির কথা ছিল। তবে আইনজীবী না আসায় সেই শুনানি হয়নি। এ অবস্থায় চিন্ময়ের জামিনের আগাম শুনানির জন্য আবেদন করেন রবীন্দ্র ঘোষ নামের এক আইনজীবী।
আগাম শুনানির আবেদনে বলা হয়, মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি একজন সন্ন্যাসী। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। আবেদনে আরও বলা হয়, নিরাপত্তা কারণে ৩ ডিসেম্বর চিন্ময়ের আইনজীবী শুভাশীষ শর্মা শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি।
এদিন আদালতে চিন্ময়ের আইনজীবী শুভাশীষ শর্মাও হাজির ছিলেন না। শুভাশীষ মামলা লড়ার জন্য রবীন্দ্র ঘোষকে লিখিত কিছু দেননি। পরে আদালত আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের করা আবেদন নাকচ করে দেন বলে জানান, চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি পিপি মফিজুল হক ভূঁইয়া। আদালত ২ জানুয়ারি তাঁদের জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি রবীন্দ্র ঘোষ আজ দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেন, নিরাপত্তার কারণে চিন্ময়ের আইনজীবী ৩ ডিসেম্বর শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি। এ জন্য আজ আগাম জামিন শুনানির আবেদন করা হয়। কিন্তু আইনজীবীদের বাধার মুখে আদালত তা নাকচ করে দেন।
উল্লেখ্য, চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর হওয়াকে কেন্দ্র করে গত ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৪০ জন।
এর আগে গত ৩১ অক্টোবর রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ফিরোজ খান নামের এক বিএনপি নেতা। পরে তাঁকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।