
ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের পাঁচ মাস পর চট্টগ্রাম নগরে সড়কবাতি স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এই প্রকল্পে ঋণ হিসেবে ভারত ২১৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং অনুদান হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের ৪৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকার অর্থায়ন করার কথা ছিল।
গত ২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক ভারতীয় ঋণের টাকায় সড়কবাতি স্থাপন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন না করার সিদ্ধান্ত হওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব ছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ২৬০ কোটি ৮৯ লাখ টাকার এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। প্রকল্পটি ভারতের লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি)-৩-এর আওতায় বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল।
এর আগে গত ৬ জুলাই ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। চট্টগ্রাম নগরের একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে সিটি করপোরেশনের পক্ষে সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এবং ভারতীয় ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান শাপার্জি পালনজি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষে জেনারেল ম্যানেজার (স্মার্ট সিটিজ) নিরাজ কুমার চুক্তিতে সই করেন।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খোন্দকার ফরহাদ আহমদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় নমনীয় ঋণের আওতায় ২৬০ কোটি ৮৯ লাখ টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৯ সালের ৯ জুলাই একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই সময় প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে ইআরডি, আইএমইডি (বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ) ও পরিকল্পনা কমিশনের সম্মতিতে ব্যয় বৃদ্ধি না করে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকার প্রকল্প বাতিলের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন এই প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে, তা জানা নেই। আমরা প্রকল্প বাস্তবায়নের পক্ষে ছিলাম।
এটি খুব দরকার ছিল জানিয়ে এই মেয়র আরও জানান, এখানে সিটি করপোরেশনের বিনিয়োগ ছিল না। অনুদান হিসেবে পাচ্ছিলাম। এটি ভালো প্রকল্প ছিল। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম আলোকিত হতো। প্রকল্পটি রাখার জন্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করার চিন্তাভাবনার কথাও জানান তিনি।’
‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকার সড়কবাতি ব্যবস্থার আধুনিকায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটির মেয়াদ শুরুতে ধরা হয়েছিল দেড় বছর। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রকল্পের কার্যক্রম গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিবকে চিঠি দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।