‘আমরা মনে করি, ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থান সফল হবে, যদি আমরা একটি সুন্দর আদর্শ গণতান্ত্রিক দেশে রূপান্তরিত হতে পারি।’
আজ শনিবার পূর্বাচলে চীন-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজিত নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ২৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থা এবং এ দেশের পুরো শাসনব্যবস্থায় মেধাকে বহু বছর ধরে একেবারে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। একই সময়ে আমরা আমাদের সাধারণ নৈতিকতার মানকেও অধঃপতিত করেছি। আমাদের সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ও হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে তোমরা বিশেষ অভিনন্দন প্রাপ্য। কারণ, তোমরা সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে দেশের অন্যতম প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি নেওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছ।’
সদ্য ডিগ্রিপ্রাপ্তদের সামনে নানা ধরনের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন শিক্ষা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘যদি এ মুহূর্তে কোনো চাকরি বা অর্থ উপার্জনের সুযোগ না–ও পাও, তাহলে অন্তত তোমার নিজের সমাজ, গ্রাম বা মহল্লায় ফিরে গিয়ে অন্তত কিছু কাজ করো। সবার সামনে যে চ্যালেঞ্জ—একটা সুন্দর সমাজ ও গণতান্ত্রিক সমাজ তৈরি করব। তাতে তোমাদের এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চেষ্টা অবদান রাখবে।’
শুধু বেতন বেশি দেয়—এ রকম চাকরির দিকে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আসলে তুমি যে কাজ ভালো কর, যে কাজ তুমি পছন্দ কর, সেটিতে যাবে।’
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা ও ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া নির্ভর করছে আপনাদের ওপর। আগামী প্রজন্মকে আশা, সম্মান ও সাম্যের আলোকবর্তিকা হিসেবে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের।’
দিনটি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য মাইলফলক বলে উল্লেখ করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি শিক্ষার্থীদের মানবসেবার মূল্যবোধ মনে রাখার পরামর্শ দেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ২০২২ ও ২০২৩ সালের ৮ হাজার ১৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৪ জন কৃতীকে আচার্য স্বর্ণপদক ও ১৬ জনকে উপাচার্য স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।