কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে দ্বিতীয় টেস্টে দাপট ছিল পেসারদেরই। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০১ রানে হারাতে গিয়ে বাংলাদেশের বোলাররা যে ২০টি উইকেট নিয়েছেন, তার মধ্যে তিন পেসারের দখলে ছিল ১৩টি। বাকি ৭ উইকেটে ভাগ বসিয়েছেন দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী মিরাজ। পেস দাপটের এ ম্যাচেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫০ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল, হয়েছেন ম্যাচ সেরাও।
শুধু বাংলাদেশ–ওয়েস্ট ইন্ডিজের গেল সিরিজেই নয়, তাইজুল বাঁহাতের ঘূর্ণিতে চমক দেখিয়ে চলেছেন এক দশকের বেশি সময় ধরে। এ পর্যন্ত ইনিংসে ৫ উইকেটই নিয়েছেন ১৫ বার। পরিসংখ্যান বলছে, ১০ বছর আগে তাইজুলের টেস্ট অভিষেকের পর তার মতো এত বেশিবার ইনিংসে ৫ উইকেট আর কোনো বাঁহাতি স্পিনারই নিতে পারেনি।
এক দশকে ভারতের রবীন্দ্র জাদেজা তাইজুলের চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন, উইকেটও পেয়েছেন বেশি, কিন্তু ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার দৌড়ে এখনো পিছিয়ে ভারতীয় অলরাউন্ডার। সাবেক অধিনায়ক সাকিব, তাইজুলের টেস্ট অভিষেকের পর থেকে খেলেছেন ৩৭ টেস্ট। ৬৫ ইনিংসে বল হাতে উইকেট নিয়েছেন ১২৪টি, ইনিংসে ৫ উইকেট ৮ বার। ক্যারিয়ারের বড় একটা সময় সাকিবের ছায়ায় থাকা তাইজুল শুধু সাকিবকেই ছাড়িয়ে গেছেন তা নয়, তার সমসাময়িক সব বাঁহাতি স্পিনারকেই টপকে শীর্ষে জায়গা নিয়েছেন।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে, সেন্ট ভিনসেন্টে উইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে তাইজুলের টেস্ট অভিষেক। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ১৩৫ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তাইজুল। এরপর ৫ উইকেট নিয়েছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনায়, দক্ষিণ আফ্রিকার গেবেখা এবং শ্রীলঙ্কার পাল্লেকেলেতেও। তাইজুলের ইনিংসে ৫ উইকেটের শিকার হয়েছে উইন্ডিজ, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, আয়ারল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা।
৯১ ইনিংস বোলিং করে ২১৭ উইকেটের মালিক তাইজুল। অভিষেকের পর থেকে সর্বশেষ ১০ বছর ৩ মাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ বার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন জাদেজা। শ্রীলঙ্কান স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরের পর খেলা ৬৭ ইনিংসের মধ্যেই ৫ উইকেট নিয়েছেন ১৩ বার। দক্ষিণ আফ্রিকার কেশব মহারাজের টেস্ট অভিষেক তাইজুলের দুই বছর পর, ৯২ টেস্ট ইনিংসে মহারাজের শিকার ১৮৬ উইকেট, ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছে ১০ বার। শ্রীলঙ্কার প্রবাথ জয়াসুরিয়া অবশ্য হেরাথের গতিতেই ছুটছেন। মাত্র ১৭ টেস্ট খেলা এই বাঁহাতি স্পিনার ৩২ ইনিংসের মধ্যেই ৫ উইকেট শিকার করেছেন ৯ বার।