ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করেছেন। বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। সোমবার দিল্লিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।
ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, ‘যদি আপনারা (ঢাকা-দিল্লি) সম্পর্কের কথা বলেন, সেটা ওখানে নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত সম্ভব নয়। তবে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক একদম ঠিক আছে, সব মসৃণভাবে চলছে।’
ভারতীয় সেনাপ্রধান এমন এক সময় এ মন্তব্য করলেন যখন সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের অনুমোদনহীন কাঁটাতারের বেড়া তৈরি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতাও অব্যাহত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অফিসাররাও এনডিসির জন্য যথারীতি সেখানে গেছেন, ওদিক থেকে কোনো সমস্যাই নেই। শুধু আমাদের যে যৌথ সামরিক মহড়া হওয়ার কথা ছিল, সেটা বর্তমান পরিস্থিতির কারণে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে সেটাও অনুষ্ঠিত হবে।’
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সময়ও দুই দেশের সেনাপ্রধানের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল বলেও জানান তিনি।
জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, ‘আজকের তারিখে আমাদের কোনো পক্ষেরই আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমার সে দেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ আছে। বস্তুত সে দেশে (বাংলাদেশ) যখন পালাবদল ঘটল, তখনও আমরা নিজেদের মধ্যে সব সময় যোগাযোগ রেখে চলছিলাম। এরপর গত ২০ নভেম্বরও আমাদের মধ্যে একটা ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে, দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবেই চলছে।’
ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, ‘উনি (বাংলাদেশের সেনাপ্রধান) যেমন বলেছেন ভারত তাদের জন্য স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ, কথাটা আমাদের দিক থেকেও সত্যি। আমরা পরস্পরের প্রতিবেশী, আমাদের একসঙ্গেই থাকতে হবে ও পরস্পরকে বুঝতে হবে। যে কোনো ধরনের শত্রুতা আমাদের উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দিল্লিতে অবস্থান করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ভারত সরকারকে আনুষ্ঠানিক চিঠিও দিয়েছে। তবে এখনও কোনো জবাব আসেনি।
এরই মধ্যে শেখ হাসিনাসহ অনেকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে শতাধিক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।