দেড় মাসের বেশি সময় হলো পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে সংগঠনটিতে প্রশাসক বসিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রশাসকের সহায়তায় করা হয়েছে ১০ সদস্যের সহায়ক কমিটি। এরপরও আগের মতো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না সংগঠনটি।
প্রশাসক নিয়োগের পর ভোটার তালিকা সংশোধনসহ বিভিন্ন সংস্কারের দাবি তুলেছে সংগঠনটির সদস্যদের একাংশ। এরই অংশ হিসেবে গত মাসে সদস্য প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষাও শুরু হয়েছে। যদিও সংগঠনটির একাংশ প্রক্রিয়াটি বন্ধ করতে প্রশাসককে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করা নিয়ে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে।
বিজিএমইএর কয়েকজন সদস্য জানান, বছরের পর বছর ব্যবসায় নেই, এমন অনেকে কৌশলে ভোটার হচ্ছেন। আর তাঁদের কেন্দ্র করে ভোটে অনিয়ম হয়। ব্যবসায় আছেন, এমন সদস্যদের কেবল ভোটার করাটা সংগঠনের জন্য মঙ্গল। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিচ্ছন্ন ভোটার তালিকা করে নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় যাওয়া দরকার। কারণ, শ্রম ইস্যু থেকে শুরু করে কারখানার নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকে যোগ্য নেতৃত্ব দরকার।
গত ২০ অক্টোবর বিজিএমইএতে প্রশাসক বসায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রশাসকের দায়িত্ব পান রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ফোরামের নেতারা বিভিন্ন সময় পরিচ্ছন্ন ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে সুষ্ঠু নির্বাচন, অনিয়ম তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তি, বিইউএফটির ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন সংস্কারের দাবি করেন। তবে বিতর্ক এড়াতে বর্তমান প্রশাসন কেবল ভোটার তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়।
গত মাসে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকৃত অবস্থা জানতে হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং নামের নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই প্রতিষ্ঠানকে এক মাসের মধ্যে সংগঠনের ৩ হাজার ৩৬০ জন সদস্যের নিরীক্ষা ও যাচাই করতে বলা হয়। যদিও পুরো কাজটি শেষ হতে ডিসেম্বর, এমনকি মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
এদিকে বিজিএমইএর ১০ জন সদস্য গত ২৫ নভেম্বর নিরীক্ষার উদ্যোগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রশাসক আনোয়ার হোসেনকে আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশদাতা বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট সম্মিলিত পরিষদের সমর্থক।
বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক দুই জোট ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ এরই মধ্যে আগামী নির্বাচনের দলনেতা চূড়ান্ত করেছে। ফোরামের দলনেতা হয়েছেন রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদ হাসান খান। আর সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা হন চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল কালাম। দলনেতা ঘোষণার মাধ্যমে উভয় জোটই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে।