দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আসা ধারাবাহিকভাবে বেড়েই চলেছে। গত আগস্টে বাংলাদেশে প্রবাসী আয় প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত বা ইউএই-কে সরিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দেশে প্রবাসী আয় প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে দেশটি। প্রবাসী আয়সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার। গত জুলাইয়ে দেশটি থেকে প্রবাসী আয় এসেছিল প্রায় ২৪ কোটি ডলার। আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় আসা তিন মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। জুলাইয়ের পর প্রতি মাসেই দেশটি থেকে প্রবাসী আয় আসা ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। আগস্টে দেশটি থেকে এসেছিল ২৯ কোটি ডলার, যা তার আগের মাসের (জুলাই) তুলনায় ৫ কোটি ডলার বেশি। সেপ্টেম্বরে এসেছে ৩৯ কোটি ডলার, আগস্টের তুলনায় যা ১০ কোটি ডলার বা সাড়ে ৩৪ শতাংশ বেশি। সর্বশেষ গত অক্টোবরে এসেছে প্রায় ৫০ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরের তুলনায় যা ১১ কোটি ডলার বা ২৮ শতাংশ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় গত তিন মাসে ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় আসা সেভাবে বাড়েনি। দেশটি থেকে জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে প্রবাসী আয় এসেছে যথাক্রমে ৩৩, ৩৪, ৩৬ ও ৩৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ ইউএই থেকে প্রবাসী আয় আসার পরিমাণ প্রায় একই রয়েছে। তাতে গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে প্রবাসী আয় প্রেরণের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে নেমে গেছে ইউএই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশে মোট প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ২৪০ কোটি ডলার। এর মধ্যে এক–পঞ্চমাংশ বা প্রায় ২১ শতাংশই এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। আর একই মাসে মোট প্রবাসী আয়ের পৌনে ১৪ শতাংশ এসেছে ইউএই থেকে। সেই হিসাবে অক্টোবরে দেশে আসা মোট প্রবাসী আয়ের ৩৫ শতাংশ বা এক-তৃতীয়াংশের বেশি এসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউএই থেকে। এই দুটি দেশ থেকে অক্টোবরে মোট প্রবাসী আয় এসেছে ৮৩ কোটি ডলার।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণ–আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়। মূলত, ক্ষমতার এই পট পরিবর্তনের পর থেকেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে ফের আশার আলো দেখাচ্ছে।