this site is under construction
COMING SOON
this site is under constructionCOMING SOON
this site is under constructionCOMING SOON
‘আমি তাঁকে ডাকতাম ভদ্র নায়ক বলে। শুধু আমি কেন, পুরো চলচ্চিত্রের মানুষই তাঁকে ভদ্র মানুষ বলে জানেন।’ ২০১০ সালে ১৫ জুলাই বুলবুল আহমেদের মৃত্যুর পর প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন কথা বলেন চিত্রনায়ক রাজ্জাক।
প্রকৃতির নিয়মে বুলবুল আহমেদ ও রাজ্জাক, কেউ এখন নেই। তাঁরা চলে গেছেন চিরদিনের মতো। মৃত্যুকে জয় করা যায় না, তবে কারও কারও ক্ষেত্রে মৃত্যুই শেষ কথা নয়। তাঁরা বেঁচে থাকেন তাঁদের কাজে, প্রিয়জন আর অনুসারীদের স্মৃতিতে। ফিরে আসেন বারবার। আজ ৪ সেপ্টেম্বর যেমন ফিরে এসেছেন বুলবুল আহমেদ। ১৯৪১ সালের এই দিনে তিনি প্রথমবার পৃথিবীর আলোতে এসেছেন।
বেদনামিশ্রিত ভালোবাসায় সন্তানেরা, অনুরাগীরা স্মরণ করছেন বুলবুল আহমেদকে। খবরের কাগজে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজ ফুটে উঠছে চিরচেনা বুলবুল আহমেদের মুখখানি। চশমা চোখে গোলগাল মুখখানি। কোনোটিতে স্মিত হাসি। যেন তিনি এখনো জাগতিক ভ্রমণের পথিক, হাঁটছেন নায়কের মতো। বাংলার নায়ক, যাকে বলা হতো ‘মহানায়ক’। সবাই ডাকতেন ‘দেবদাস’।
বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, সুদৃঢ়। উত্তমকুমার, দিলীপ কুমারের বেশ ভক্ত ছিলেন বুলবুল আহমেদ; তাঁদের আদলে চুলের ছাঁট দিতেন। ছোট থেকে বড় হওয়া অবধি এ স্টাইল অনুসরণ করেছেন। সাদা–কালো ‘দেবদাস’ যুগ পেরিয়ে রঙিন মহানায়ক চলচ্চিত্রের মতোই তিনি সময় থেকে সময়কে জয় করেছেন স্বমহিমায়। সুদর্শন নায়ক বলতে যে কয়জন সত্তর-আশির দশকে বাঙালি দর্শকের মন জয় করেছেন, তরুণীদের স্বপ্নের মানুষ হয়েছেন, তাঁদের অন্যতম বুলবুল আহমেদ।
বছর তিরিশেক আগের কথা। আশির দশকের শেষের দিকে। পুরান ঢাকার হাটখোলা রোডের এক বাসায় থাকতেন বুলবুল আহমেদ। ’৮৬ সাল থেকে এই এলাকায় সপরিবার তাঁর বাস। প্রায় দেখতাম তাঁকে। তখন তিনি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় নায়ক। অথচ কী সাধারণ জীবনযাপন! সেই সময়কার হাটখোলা এলাকার এক পানদোকানির সঙ্গে কথা হয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে। বুলবুল আহমেদের প্রসঙ্গ আসতে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন সোহরাব হোসেন। বললেন, ‘আহা, দেবুদা! খুব একটা পানের অভ্যাস ছিল না, তবে আমার দোকান থেকে একটা পান খেতেন। সব সময় কুশলাদি জিজ্ঞেস করতেন। কোনো দেমাগ ছিল না লোকটার।’
মনে পড়ে অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামানের কথা। তিনিও অনন্তকালের যাত্রী হয়েছেন। ২০১৯ সালে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল বুলবুল আহমেদ প্রসঙ্গে। ‘বুলবুল আহমেদ শুধু ভদ্রলোকই নন, একজন প্রকৃত মানুষ ছিলেন। এখন তো তাঁকে সরাসরি পাওয়া যাবে না, তাঁর সিনেমা দেখো।’ বলেছিলেন তিনি। সেবার এ টি এম শামসুজ্জামান পেয়েছিলেন বুলবুল আহমেদ স্মৃতি সম্মাননা পদক। সহশিল্পীর স্মরণে চোখে ছিল জল। বিটিভির আলোচিত নাটক ‘দক্ষিণের জানালা’, ‘এইসব দিনরাত্রি’তে বুলবুল আহমেদের সহশিল্পী ডলি জহুর প্রথম আলোকে দেওয়া স্মৃতিচারণায় বলেন, ‘বেশ পরিপাটি মানুষ ছিলেন বুলবুল ভাই। সাবলীল ভঙ্গিতে কথা বলেন। নিপাট ভদ্রলোক, কাজের ফাঁকে মজা করতেন, গল্প শোনাতেন।’